এবার ধর্মীয় পোশাক কিমোনো পরিধান করায় এক ছাত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সের লিয়ন শহরের এক স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশটিতে গত সপ্তাহে স্কুলে আবায়া নিষিদ্ধের পর বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) কিমোনো পরায় এমন অভিযোগ উঠেছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের প্রতি প্রাধান্যের অংশ হিসেবে ফ্রান্সের স্কুলে আবায়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আবায়া সরাসরি ধর্মীয় পোশাক না হলেও এর সঙ্গে ধর্মীয় পোশাকের সাদৃশ্য থাকায় এমন করা হয়েছে। এ সময় স্কুলের পক্ষ থেকে কিমোনো পরিধান করায় তার পরিবারকে তলব করা হয়েছে। কিমোনো মূলত জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। এটি সাধারণ পোশাকের ওপর অতিরিক্ত লস্বা কোটের মতো করে পরিধান করা হয়।
আনাদোলু জানিয়েছে, বুধবার ১৫ বছর বয়সী ওই ছাত্রীকে স্কুলে তলব করা হয়েছে। এর একদিন আগে কিমোনো পরায় তাকে স্কুল থেকে বাড়ি পাছিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ওই ছাত্রীকে তার পোশাক পরিবর্তন না করা পর্যন্ত ক্লাসে ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে।
ওই ছাত্রীর মা ও তার বোন জানিয়েছেন, আবায়া কোনো ধর্মীয পোশাককে প্রতিনিধিত্ব করে না। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো যোগসাজশ নেই। তবে জাপানিদের ঐতিহ্যগত পোশাক। তবে প্রিন্সিপালের দাবি, কিমোনো ধর্মীয় পোশাক না হলেও এটির সাথে ধর্মীয় পোশাকের সাদৃশ্য রয়েছে।
এর আগে অবায়া নিষিদ্ধ করায় গত সপ্তাহে আবায়া পরে ফ্রান্সের স্কুলে এসেছেন অন্তত তিন শতাধিক স্কুলশিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে আবায়া খুলতে অস্বীকার করছেন অন্তত ৬০ শিক্ষার্থী। ফ্রান্সের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল আরএমসির এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সম্প্রতি ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবায়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে আবায়া পরে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্কুলগুলোতে আর আবায়া পরা যাবে না। তিনি বলেন, আপনি যখন ক্লাসরুমে যাবেন, তখন আপনি শুধু পোশাক দেখেই ছাত্রদের ধর্ম শনাক্ত করতে সক্ষম হবেন না। সে জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
ফ্রান্স ২০০৪ সালে স্কুলে স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করে। আর ২০১০ সালে প্রকাশ্যে বোরকায় মুখ পুরোপুরি ঢাকাও নিষিদ্ধ করে। এ নিয়ে দেশটির ৫০ লাখ মুসলিম অধিবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মন্তব্য করুন