যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউক্রেন। দেশটি তরুণদের জন্য নানা সুবিধারও ঘোষণা দিয়েছে। এরপরও মিলছে না আশানুরূপ সাড়া।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের তরুণদের আকৃষ্ট করতে উচ্চ বেতন, এককালীন বোনাস এবং সুদমুক্ত হোম লোনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাতে সম্মুখ যুদ্ধে নামার শর্তে এই প্রস্তাব অনেকের কাছেই ‘মরণফাঁদ’ বলে মনে হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া এই নিয়োগ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০০ জনেরও কম তরুণ চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সামরিক উপদেষ্টা পাভলো পালিসা। প্রাথমিকভাবে ছয়টি ব্রিগেডে সীমাবদ্ধ এই কর্মসূচি পরে ২৪টি ব্রিগেডে সম্প্রসারিত হয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তিন বছরের যুদ্ধে বিপর্যস্ত, সৈন্যসংখ্যায় পিছিয়ে রয়েছে রাশিয়ার তুলনায়। শত শত তরুণের অংশগ্রহণ এখনো আশানুরূপ নয়।
সাম্প্রতিক নিয়োগপ্রাপ্তদের একজন ২০ বছর বয়সী পাভলো ব্রোশকভ। তিনি বলেন, আমি চাই না আমার মেয়ে পোলিনা কখনো ‘যুদ্ধ’ শব্দটা শুনুক। আমার দায়িত্ব দেশের জন্য কিছু করা।
তিনি জানান, তার এক বছরের সামরিক পরিসেবার বিনিময়ে যে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে, সেটিও তার জন্য প্রলোভনস্বরূপ। এতে প্রায় ২,৯০০ ডলারের মাসিক বেতন, ১০ লাখ হৃভনিয়া (প্রায় ২৪,০০০ ডলার) বোনাস এবং একটি সুদমুক্ত বাড়ির ঋণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে এই স্বপ্নের পেছনে রয়েছে গভীর দুশ্চিন্তা। ব্রোশকভের ১৮ বছর বয়সী স্ত্রী ক্রিস্টিনা বলেন, টাকা একটা অনুপ্রেরণা হতে পারে, কিন্তু শুধু টাকার জন্য মরতে যাওয়া... সেটা কোনো অর্থ বহন করে না। মৃত্যু এখন আমার স্বামীর পেছনে ছুটছে, আর যে কোনো সময় তাকে ধরে ফেলতে পারে।
ইউক্রেন সরকার বলছে, এটি এখনো কর্মসূচির প্রাথমিক পর্যায়। তবে বিশ্লেষকদের মতে, তরুণদের আস্থা অর্জনে কেবল আর্থিক সুবিধা যথেষ্ট নয়- দরকার নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের প্রতি আশ্বাস।
মন্তব্য করুন