যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় লাগাতার ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। টানা কয়েক দিন ধরে বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ ও ভবন ধ্বংসের মাধ্যমে গাজায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
গাজার ভয়ানক এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশ ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা জিউসেপ কন্টে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। খবর আনাদুলো এজেন্সি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এক্স (পূর্বের টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে জিউসেপ কন্টে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। শুধু গত দুই সপ্তাহেই ৩০০ জনের বেশি শিশু ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব হামলা মূলত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের এই বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না। অথচ ইতালি ও ইউরোপ এ ব্যাপারে নীরব রয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছে, যার বাস্তব কোনো ফল নেই।’
কঠোর ভাষায় দেওয়া বার্তায় ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইতালির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেতা বলেন, ‘ইসরায়েলের ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। একইসঙ্গে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের ও তাদের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও প্রয়োজন।’
গাজায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হতাহতের প্রতিবাদে ইতালির মিলান শহরে শত শত মানুষের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানান।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০ হাজার ৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়লেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।
এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গেল বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন