ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে গোটা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে একাই লড়ে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিন। নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা, আর শত রক্তচক্ষুও টলাতে পারেনি তাকে। এবার আপসহীন সেই পুতিনের হাতেই চলে গেল ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চাবিকাঠি। ট্রাম্পের চাপের মুখে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এখন পুতিন রাজি হলেই থেমে যাবে ৩ বছর ধরে চলা যুদ্ধটা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আমেরিকার উত্থাপিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সংলাপ শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে কিয়েভের এই সম্মতির কথা জানানো হয়েছে। ওই বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে পুনরায় সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য দিতে রাজি হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ দিনের একটি অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইউক্রেন।
জেদ্দার ওই বৈঠকে মার্কো রুবিওর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়েরমাক অংশ নেন। তবে বৈঠকে রাশিয়ার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বল এখন [রাশিয়ানদের] কোর্টে।’ এখন মস্কোর কাছে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আশা করেন—রাশিয়ানরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সমুদ্র ও আকাশ পথে আংশিক যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার বাইরে গিয়ে ‘আমাদের প্রস্তাবটি হলো গোলাগুলি বন্ধ করা।’
তিন বছর আগে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। সেই থেকে এই যুদ্ধ চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া যুদ্ধে অগ্রগতি পাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার দখলে। এর মধ্যে ক্রিমিয়াও রয়েছে, যে উপত্যকা ২০১৪ সালে দখল করে নিয়েছিল মস্কো।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি আরবে অবস্থান করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওই বৈঠকে অংশ নেননি। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি একটি ‘ইতিবাচক প্রস্তাব’, যা কেবল আকাশ ও সমুদ্রপথে লড়াই নয়, যুদ্ধের সম্মুখ সারির জন্যও প্রযোজ্য।
মন্তব্য করুন