সৌদি আরবের জেদ্দায় মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে ইউক্রেন। এই বৈঠকে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের সমাধানে একটি আংশিক যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন। খবর এএফপি।
এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কিয়েভের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সমর্থন সংগ্রহ করা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে তিন বছরের যুদ্ধের দ্রুত অবসানে কিয়েভকে আপসের আহ্বান জানানোর পরিকল্পনা করছেন।
এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা প্রদান স্থগিত করে দিয়েছে।
তবে, কিয়েভ মস্কোর বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করছে। গত সপ্তাহে, রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ৩৩৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ৯১টি ড্রোন মস্কো শহরের ওপর আছড়ে পড়ে।
এ ছাড়া এক মাস আগে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে আগের বৈঠকটি ভেস্তে যাওয়ার পর, জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে অনুতাপ প্রকাশ করেছিলেন।
এখন, জেদ্দায় সৌদি শাসকদের সঙ্গে দেখা করতে আসলেও, জেলেনস্কি নিজে বৈঠকে অংশ নেবেন না। তিনি তার শীর্ষ তিন সহযোগীকে ওই বৈঠকে পাঠিয়েছেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজ বৈঠকে যোগ দেবেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, সামরিক সহায়তা স্থগিত করার বিষয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারবেন।
জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে একটি চুক্তিতে সই করার কথা ছিল, যেখানে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ মার্কিনিদের সরবরাহ করা হতো, তবে এই চুক্তি আলোচনায় মূল ভূমিকা পালন করবে না, এমনটি জানিয়েছেন রুবিও।
রুবিও এবং ওয়ালজ উভয়েই এই আলোচনায় অংশ নিতে এসেছেন এবং আশা করছেন, তারা ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সমাধানে সহায়তা করতে পারবেন। তবে, রুবিও মনে করেন, পূর্ণাঙ্গ আপস ছাড়া যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার জন্য পুরো ইউক্রেন দখল করা সম্ভব হবে না এবং পূর্ববর্তী সীমিত আক্রমণের মতো ২০১৪ সালের অবস্থানে ফিরে যাওয়া কঠিন হবে।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠককালে, জেলেনস্কি ইউক্রেনের স্থায়ী শান্তি চুক্তির শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সৌদি আরবের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা নিয়ে আলাপ করেছেন।
তবে, রুবিও জানান, এই বৈঠকে মানচিত্রে ‘রেখা টেনে’ চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব নয়, তবে এই আলোচনা রাশিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছাতে সহায়ক হবে।
মন্তব্য করুন