ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে ইউরোপের এক ডজনের বেশি নেতা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।
স্থানীয় সময় রোববার (২ মার্চ) এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ আরও বৃদ্ধি করা। খবর এপি।
এর আগে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ এবং ব্যর্থ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ইউরোপীয় নেতারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। বৈঠকে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং শান্তিচুক্তি, রুশ আগ্রাসন প্রতিহত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলন
এই বৈঠকে অংশ নিতে ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, ইতালি, তুরস্ক, ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করবেন এবং এই সংকটে একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার করবেন।
যুক্তরাজ্যে জেলেনস্কির সফর
বৈঠকের পূর্বে, শনিবার (১ মার্চ) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান এবং সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে দুই নেতা ২ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণচুক্তি ঘোষণা করেন, যা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হবে। এই অর্থ রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে আসবে।
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক
তারও আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠকটি উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় জেলেনস্কিকে ‘অকৃতজ্ঞ’ হিসেবে আক্রমণ করেন এবং ইউক্রেনের অবস্থানকে বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেন। তবুও, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া
এই বৈঠক শেষে ইউরোপীয় নেতারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানান। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘তিনি এই সংঘাতে ভুক্তভোগী ও হামলাকারীকে পাল্টে দিচ্ছেন, যা এক নতুন অন্ধকার যুগের সূচনা করতে পারে।’ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কও ইউক্রেনের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন ঘোষণা করেন।
আগামী পরিকল্পনার
লন্ডনের এই জরুরি বৈঠক ইউরোপীয় নেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি কৌশল প্রণয়ন করা হবে।
একই সাথে, ইউরোপীয় কমিশন আগামী বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এক নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে, যা ইউক্রেনসহ পুরো ইউরোপের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করবে।
নতুন সহায়তার আশ্বাস র
এই বৈঠকটি এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে কৌশলগত সহযোগিতা ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা আরও দৃঢ় করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ইউরোপের নেতারা দৃঢ়ভাবে আশা প্রকাশ করেছেন যে, ইউক্রেন সংকটের সমাধানে তারা একত্রে কাজ করতে সক্ষম হবেন।
মন্তব্য করুন