ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে হওয়া উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার জন্য কোনোভাবেই ক্ষমা চাইবেন না।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক সাক্ষাৎকারে সিএনবিসিকে দেওয়া বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেন, তিনি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইবেন না, তবে একে ‘এটি উভয় পক্ষের জন্যই ভালো নয়’ বলে স্বীকার করেন।
সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, যখন সাংবাদিকরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি কি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইব, বিশেষ করে যখন ট্রাম্প দাবি করেছেন যে আমি তাকে অসম্মান করেছি- তখন আমি সোজাসুজি ‘না’ বলেছি। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে মাকিন সমর্থন জরুরি যার ফলে এ ধরনের প্রকাশ্য সংঘর্ষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
এছাড়া তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি দুঃখিত যে এই বিবাদ সাংবাদিকদের সামনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। তবে তিনি আরও বলেন, আমরা সত্যিই চাই যে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হোক।
যখন তাকে পুনরায় প্রশ্ন করা হয় যে, তিনি কি এখনো ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইবেন। তখন তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই সৎ ও খোলামেলা সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমি নিশ্চিত নই যে আমরা কোনো ভুল করেছি।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধ কঠিন
জেলেনস্কি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে সহায়তা বন্ধ করে দেয়, তবে রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ করা ইউক্রেনের জন্য ‘অত্যন্ত কঠিন’ হয়ে পড়বে। তিনি জানান, এ কারণে আমরা এখানে এসেছি। আপনাদের সহায়তা ছাড়া আমাদের পক্ষে এটি সম্ভব নয়।
তিনি মার্কিন জনগণ এবং প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং কংগ্রেসের প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনাদের সহায়তায় আমরা পুরো আক্রমণের তিন বছরের মধ্যে বেঁচে থাকতে পেরেছি।
হোয়াইট হাউসে এবং চুক্তির স্থগিতকরণ
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র বিতর্কের সূত্রপাত হয়, যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স দাবি করেন যে, ইউক্রেন কূটনৈতিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। জেলেনস্কি এই দাবি খণ্ডন করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের চুক্তি লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরেন।
তবে বিতর্কের পর জেলেনস্কি চুক্তি স্বাক্ষর স্থগিত করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার দেওয়া হতো। কিন্তু জেলেনস্কি চেয়েছিলেন, এর বিনিময়ে ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার নিশ্চয়তা দেবেন।
ইউরোপীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনার পর ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং একাধিক সামাজিক মাধ্যম পোস্টে নিজেদের অবস্থান জানান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস বলেন, আমরা ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থন আরও জোরদার করব, যাতে তারা আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন