মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে নেওয়ার প্রলোভনে অন্ধ হয়ে পড়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সে অন্ধত্বেই অনেকটা অসম একটি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেন নিজের দেশকে। এবার যখন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তখন আবারও সেই ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বায়না ধরছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রবেশের বিনিময়ে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে প্রস্তুত আছেন। তবে আদৌ কি এটা সম্ভব! রাশিয়া কি ইউক্রেনের ন্যাটোতে প্রবেশ মেনে নেবে?
জেলেনস্কির সম্প্রাতিক প্রস্তাবের পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছে দেশটি। সোমবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে প্রবেশের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন।
ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ওয়াল্টজ বলেছেন, আমি এমন কিছু দেখতে পাচ্ছি না যে, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে প্রবেশ করানো এবং তারপরে মার্কিন সৈন্যদের অপরিহার্যভাবে আর্টিকেল ফাইভের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য মোতায়েন করা হবে। ইউক্রেনে সরাসরি মার্কিন সৈন্যদের মোতায়েনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি ন্যাটোর আর্টিকেল ফাইভকে পারস্পরিক-প্রতিরক্ষা ধারা বলে উল্লেখ করেন, যা সদস্যদের কোনো মিত্রের প্রতিরক্ষায় সবাই আসতে বাধ্য যদি কোনও রাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হয় এবং সাহায্যের অনুরোধ করে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র শুধু একবারই তেমন আহ্বান জানিয়েছিল।
এর আগে ইউক্রেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদ পেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি হন ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
মূলত সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যায়িত করার পর তার এমন আগ্রহের কথা সামনে আসে। সেদিন জেলেনস্কি বলেন, ‘আপনারা যদি আমাকে এই চেয়ার থেকে সরে যেতে বলেন, তা করতে আমি প্রস্তুত রয়েছি। আর ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্যপদের বিনিময়েও আমি তা করতে পারি।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটের সদস্য হিসেবে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ এতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি রাশিয়ার মুখোমুখী হয়ে যাবে। এমনটা ঘটলে এই যুদ্ধ আর ইউক্রেনের সীমানার মধ্যে আটকে থাকবে না। পরাশক্তি দেশগুলো সবাই এই যুদ্ধের অংশ হয়ে পড়ুক সেটা কেউই চাইবে না। তাই আপাতত ইউক্রেনের ন্যাটোতে প্রবেশের বাসনা অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন