মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিতে পারেন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে, যা পুতিনের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলো এখন সন্দিহান যে যুক্তরাষ্ট্র কতটা আন্তরিকভাবে ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি পুতিনের জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করছে, কারণ পশ্চিমা ঐক্য দুর্বল হলে ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে রাশিয়া সহজেই সুবিধা নিতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে বাদ দিয়েই রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা করতে পারে। এতে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। কারণ রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করেছে এবং সেখানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও উঠেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে বলেছেন, ইউক্রেনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার একতরফা সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন না।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। মার্কিন পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ। অপরদিকে রাশিয়া পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও জানান, ট্রাম্প সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তবে শান্তি আলোচনার ফল কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেন, তাহলে সেটি রাশিয়ার দখলকে বৈধতা দিতে পারে। অর্থাৎ, রাশিয়া যে ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করেছে, তা মেনে নেওয়া হতে পারে।
এছাড়া, সম্ভাব্য চুক্তিতে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার পথ বন্ধ হতে পারে। পাশাপাশি, ইউক্রেনে মার্কিন বা পশ্চিমা শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সুযোগও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞ আলেকজান্ডার গাবুয়েভ বলেছেন, এটি পুতিনের জন্য একসঙ্গে বড় উৎসবের মতো হবে, যদি যুক্তরাষ্ট্র এমন চুক্তি করে যা রাশিয়াকে সুবিধা দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি পরিবর্তন হলে ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এখন দেখার বিষয়, আসন্ন বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয় এবং সেটি বিশ্ব রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে।
মন্তব্য করুন