ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাইলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সব শর্ত মেনে নিতে হবে বলে জানিয়েছে মস্কো। শান্তি আলোচনায় বসার জন্য এ শর্তগুলো পূরণ করা ‘অপরিহার্য’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা নিয়ে রাশিয়ার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত বছর প্রেসিডেন্ট পুতিন যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছিলেন, সেগুলোই এখনো আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে বহাল রয়েছে।
শর্ত পূরণ ছাড়া শান্তি অসম্ভব : রাশিয়া
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ১০ ফেব্রুয়ারি মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি যে পুতিনের শর্তগুলো পূরণ না হলে ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, যত তাড়াতাড়ি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ বিষয়টি উপলব্ধি করবে, তত দ্রুত প্রত্যাশিত রাজনৈতিক সমাধান পাওয়া সম্ভব হবে।
পুতিনের শর্ত কী?
গত বছরের ১৪ জুন দেওয়া এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট পুতিন দুটি প্রধান শর্ত দিয়েছিলেন- এক, ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। দুই, যুদ্ধে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।
অপরদিকে কিয়েভ এ শর্তগুলোকে ‘পূর্ণ আত্মসমর্পণের শামিল’ বলে উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউক্রেন বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাশিয়ার দখলে যাওয়া ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
ট্রাম্পের ভূমিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ক্ষমতায় ফিরলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু তার ফিরে আসার পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্প দাবি করেছেন, আলোচনা কিছুটা এগিয়েছে, তবে সংকট কীভাবে সমাধান করবেন, সে সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার শর্ত মেনে নেওয়া ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে, পশ্চিমা সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাও কিয়েভের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার উদ্যোগ চললেও উভয় পক্ষের মধ্যে স্থায়ী সমাধান আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন