অন্তত ২০০টি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল গ্রিসের সান্তোরিনি দ্বীপ। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দ্বীপটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজার হাজার স্থানীয় মানুষ ও পর্যটক। তারা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের আশঙ্কায় বেশ ভীত। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার ঘটা ভূমিকম্প আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত নয়। খবর আলজাজিরার।
গ্রিসের মনোরম দ্বীপটি কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। এর সুবাধে পর্যটক বাড়ে বহুগুণ। দ্বীপটি বিশ্বে প্রচার পায় ‘ইনস্টাগ্রাম দ্বীপ’ নামে।
শুধু সান্তোরিনি দ্বীপ নয়, ভূমিকম্পের ফলে পাশের এজিয়ান সাগরের প্রতিবেশী দ্বীপের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রাসেলস থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মিতসোটাকিস বলেন, কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে খুব তীব্র ভূতাত্ত্বিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। তবুও আমাদের দ্বীপবাসীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের রেকর্ড অনুসারে, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা পর্যন্ত কয়েক মিনিটের ব্যবধানেও ভূমিকম্প অব্যাহত ছিল। সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পনটি রেকর্ড করা হয় সোমবার বিকেলে। এর মাত্রা ছিল ৫.১। রোববারও দফায় দফায় কেঁপে উঠে দ্বীপটি।
কম্পনের পর সান্তোরিনি এবং পাশের আনাফি, আইওস এবং আমোরগোস দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার স্থানীয় এবং ছুটি কাটাতে আসা মানুষ ফেরি এবং বিমানে ভিড় করেছেন। কার আগে কে যাবেন, সে জন্য তাদের হুড়োহুড়ি করতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, এই ভূমিকম্পগুলো এখনো পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটায়নি। কিন্তু হয়তো আরও বড় ভূমিকম্প আসছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। মনোরম অর্ধচন্দ্রাকার সান্তোরিনি দ্বীপটি একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির আবাসস্থল। এখানকার ভবনগুলো ৩,০০০ বছরেরও বেশি সময় আগে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, ৩ বা তার বেশি মাত্রার আনুমানিক ২০০টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনাটি আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা মুশকিল।
এএফপি সংবাদ সংস্থার মতে, রোববার এবং সোমবার সমুদ্রপথে প্রায় ২,০০০ মানুষ সান্তোরিনি ছেড়েছেন। ফেরি অপারেটর এবং বিমান সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দেশটির জলবায়ু সংকট ও নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পর তারা আরও বেশি লোককে চলে যেতে সাহায্য করার জন্য বিশেষ পরিসেবা যোগ করছে।
১৭ বছর ধরে এই দ্বীপে বসবাসকারী একজন পর্যটক গাইড কোস্টাস সাকাভারাস এএফপিকে বলেন, এর আগে কখনো এই স্তরের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা হয়নি। সোমবার প্রতি তিন থেকে চার ঘণ্টা অন্তর কম্পন হচ্ছিল। এটি অন্য সময়ের চেয়ে আলাদা মনে হচ্ছে।
মন্তব্য করুন