রাশিয়া ও ইরান ২০ বছরের চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও গভীর করল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এ চুক্তিপত্রে সই করেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তির মাধ্যমে দেশ দুটির মধ্যে সামরিক সম্পর্ক আরও গভীর হলো; যা পশ্চিমা বিশ্বকে দুশ্চিন্তায় ফেলার সম্ভাবনা প্রবল।
চুক্তির অধীনে রাশিয়া এবং ইরান তাদের নিরাপত্তা পরিষেবা, সামরিক মহড়া, যুদ্ধজাহাজের বন্দর পরিদর্শন এবং যৌথ অফিসার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। উভয় দেশই তাদের ভূখণ্ডকে এমন কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার করতে দেবে না; যা একে অপরের জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা উভয়ই তাদের জাতির ওপর আক্রমণকারীকে কোনো সহায়তা প্রদান করবে না। এই চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হলো- তারা একে অন্যের ওপর সামরিক হুমকি মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে।
চুক্তির ফলে ইরান ও রাশিয়ার সম্পর্ক সামরিক খাতে আরও দৃঢ় হয়েছে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর, রাশিয়া ইরান থেকে ড্রোন কিনে ইউক্রেনে ব্যবহার করেছে। দুই দেশ যৌথভাবে সামরিক প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কও বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে তেল ও গ্যাস বাণিজ্য।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মস্কো সফর শুরু করেছেন। এই সফরের সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দুই দেশ একটি 'কৌশলগত অংশীদারত্ব' চুক্তি সইয়ে সম্মত হয়। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিপত্রে সই করেন দুই নেতা।
এদিকে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মনে করছে, রাশিয়া ও তার শত্রু দেশগুলোর সম্পর্ক বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে ইরানের চুক্তিটি মূল্যায়ন করতে পারে পশ্চিমারা। কারণ, দুই দেশের যুদ্ধ প্রস্তুতি আরও জোরালো হবে এবং অন্তিম মুহূর্তে মিলেমিশে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে দায়বদ্ধ থাকবে ইরান ও রাশিয়া। দুই শক্তির এই মিলন তাই শত্রুদের জন্য আতঙ্কের।
মন্তব্য করুন