প্রসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পরাশক্তি হয়ে উঠার চেষ্টা করছে তুরস্ক। নিজেদের স্বার্থেই আঙ্কারার এমন মনোভাব মেনেও নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মতো বর্তমান পরাশক্তিরা। সম্প্রতি ভূরাজনীতিতে একটি বড় সাফল্যের মুখ দেখায় এবার তুরস্কের উচ্ছাসিত প্রশংসায় মাতলেন নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ন্যাটোভুক্ত দেশটির সঙ্গে সামনের দিকে সম্পর্ক কোন দিকে এগিয়ে যাবে তারও ইঙ্গিত দিলেন রিপাবলিকান এই নেতা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ঘটনাকে একটি বন্ধুবিহীন দখল বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে নিয়মিতভাবে আসাদবিরোধীদের সমর্থন দিয়ে আসছিল আঙ্কারা। অন্যদিকে আসাদের পক্ষে শুরু থেকেই মাঠে লড়াই করে যাচ্ছিল ইরান ও রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। ফলে আসাদের পতনে তুরস্কের কাছে একপ্রকার বড় ধরণের হারের মুখে পড়েছে মস্কো ও তেহরান।
ফ্লোরিডাতে অবস্থিত বাসভবন মার-ই-লাগোতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তুরস্কের প্রশংসা করে জানান, আঙ্কারা খুবই চালাক। বিপুল প্রাণহানি ছাড়াই তারা সিরিয়াতে একটি বন্ধুত্ববিহীন ক্ষমতার দখল সম্পন্ন করেছে। এ সময় আসাদকে কসাই বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানান, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে শিশুদের ওপরও নির্যাতন চালিয়েছে সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত এই স্বৈরাশাসক।
ট্রাম্পকে সিরিয়ায় মোতায়েন থাকা মার্কিন সেনাদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কেউ জানে না সিরিয়ায় কী হবে। তবে তিনি মনে করেন তুরস্ক আগামী দিনে রাষ্ট্রটির নীতিমালা ঠিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের ফলে মনে করা হচ্ছে সামনের দিনগুলোতে আঙ্কারার মাধ্যমেই মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষণে সক্রিয় হবে ওয়াশিংটন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্য ক্ষমতা গ্রহণের আগে তার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতির একটি ইঙ্গিত প্রদান করে। এরআগে সিরিয়ার এই সংঘাত নিয়ে রিপাবলিকান এই নেতা জানিয়েছিলেন সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু করার নেই, যাদের লড়াই তাদেরকেই লড়তে দিতে হবে।
সিরিয়াতে আসাদ ও তুরস্ক বিরোধী কুর্দি সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে সামরিক পরামর্শ দেয়ার জন্য প্রায় হাজার খানেক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব মার্কিন সেনারা অঞ্চলটিতে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এর বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সহায়তা করছে কুর্দি ও অন্যান্য বাহিনীকে। তবে ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে সিরিয়া থেকে ৯০০ সেনা প্রত্যাহার করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প, যদিও পরে মিত্রদের চাপে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি।
মন্তব্য করুন