ইউক্রেনে রাশিয়ার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে আসলেই রাশিয়া এ কাজ করেছে কি না। যদি সেটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র না হয় তবে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালের হামলায় রাশিয়া কী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে তারও স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা মিলেনি।
আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার নিয়ে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর বিবৃতির পর প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নরম সুর; এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার মন্তব্যে এ ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, রাশিয়া আজ ভোরে আস্ট্রখান অঞ্চল থেকে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। একই সঙ্গে একই লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ছুড়ে তারা। ইউক্রেনের ডিনিপ্রো অঞ্চল লক্ষ্য করে রাশিয়া এ হামলা চালায়।
ইউক্রেন যুদ্ধে এ ধরনের অত্যাধুনিক দূরপাল্লার অস্ত্র প্রথমবারের মতো ব্যবহার করল রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম। সাধারণত, অন্য মহাদেশে শত্রুর ঘাঁটিতে হামলা করতে এ ধরনের অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, তারা এ হামলার সময় ছয়টি কেএইচ-১০১ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। এর মানে হচ্ছে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটির সঙ্গে আরও বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। রাশিয়া হয়তো চেয়েছে, ডিনিপ্রো অঞ্চলটিকে হঠাৎ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে।
কিন্তু এরপরই জেলেনস্কি এ নিয়ে কথা বলেন। তার বক্তব্যে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ সরাসরি আনা হয়নি। এর বদলে তিনি বলেন, একটি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ডিনিপ্রোর দিকে ছোড়া হয়। যেটিতে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
এরপর সন্দেহের মাত্রা বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার মন্তব্য। ইউক্রেনের দাবির বিরোধিতা করেছেন ওই মার্কিন কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে বলেছেন, ইউক্রেনে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। সেটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়।
সিবিএস নিউজের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাতে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিশ্চিত হতে আমরা এখনও মার্কিন সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছি।
হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। এ নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি তাদের রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও।
এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করলেও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে লুকোচুুরি শুরু করেছে। হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ এখনও তারা জানায়নি। তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। সেসবে ভবনে আগুন নেভানোসহ ধসে পড়া ভবনে উদ্ধার কাজ করতে তাদের দেখা গেছে।
এ ছাড়া কিছু ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। সেসব যাচাইয়ের চেষ্টা করছে বিবিসি।
মন্তব্য করুন