রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। এতে শঙ্কিত হয়ে হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটোভুক্ত দেশ হাঙ্গেরি। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ‘এটিএসিএমএস’ (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। এরপর তা ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলাও শুরু করে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। এর কয়েকদিন পর আজ আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনে হামলা করে রাশিয়া। এ ছাড়া ইউক্রেনে আক্রমণের মাত্রাও বাড়িয়েছে পুতিনের বাহিনী।
এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে ন্যাটোভুক্ত হাঙ্গেরি। এর অংশ হিসেবে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে তারা অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করবে।
হাঙ্গেরির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টফ সজালে-বব্রোভনিস্কি বুধবার গভীর রাতে ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেন, দেশটি ইউক্রেনের সীমান্তে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করবে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আগের চেয়ে বড় হুমকি তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো বিশ্বাস করি যে সামরিক সমাধানের পরিবর্তে কূটনীতির মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ অঞ্চলে শান্তি আসবে। তবে, সমস্ত সম্ভাবনার জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আমি সম্প্রতি কেনা বিমান নিয়ন্ত্রণ এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উত্তর-পূর্ব সীমান্তে স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি।
এর আগে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান হাঙ্গেরির প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এরপর মন্ত্রী এ ধরনের ঘোষণা দিলেন।
এদিকে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে হামলা করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে এ হামলা করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, রাশিয়া আজ ভোরে আস্ট্রখান অঞ্চল থেকে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। একই সঙ্গে একই লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ছুড়ে তারা। ইউক্রেনের ডিনিপ্রো অঞ্চল লক্ষ্য করে রাশিয়া এ হামলা চালায়।
ইউক্রেন যুদ্ধে এ ধরনের অত্যাধুনিক দূরপাল্লার অস্ত্র প্রথমবারের মতো ব্যবহার করল রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম। সাধারণত, অন্য মহাদেশে শত্রুর ঘাঁটিতে হামলা করতে এ ধরনের অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, তারা এ হামলার সময় ছয়টি কেএইচ-১০১ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। এর মানে হচ্ছে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটির সঙ্গে আরও বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। রাশিয়া হয়তো চেয়েছে, ডিনিপ্রো অঞ্চলটিকে হঠাৎ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে।
মন্তব্য করুন