রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্র প্রভাব দেশটির তরুণ দম্পতিদের মধ্যে সন্তানের প্রতি আগ্রহ হ্রাস করছে, যা একদিকে দেশটির ভবিষ্যৎ জনসংখ্যা সংকটের পথে ঠেলে দিচ্ছে।
রাশিয়ার পুতিন সরকার, যা ইতোমধ্যে যুদ্ধের কারণে ব্যাপক মানবিক ক্ষতির সম্মুখীন, এখন বিপুল সংখ্যক সেনা হারানোর পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে, যুদ্ধের ভয়াবহতা, সংসার জীবনের অনিশ্চয়তা এবং পরিবারের টানাপড়েন তরুণদের সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধের প্রভাব শুধু সামরিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও গভীর প্রতিকূলতা সৃষ্টি করছে। দীর্ঘকালীন যুদ্ধের ফলে বহু পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে তাদের সামাজিক ও মানসিক অবস্থার ওপর।
পুরুষ সদস্যদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান, অনেকের মৃত্যুবরণ কিংবা গুরুতর আহত হওয়া তরুণ দম্পতিদের মধ্যে সন্তান ধারণের ইচ্ছা কমিয়ে দিয়েছে। বিশেষত তরুণরা বর্তমান এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ানোর কারণে সন্তান নেওয়ার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নানা আর্থিক ও সামাজিক সুবিধার প্রস্তাব দিলেও, যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাব কাটাতে না পারলে এসব পরিকল্পনা সফল হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পুতিন সরকারের পদক্ষেপগুলো তরুণদের মধ্যে সন্তানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে চাইলেও, যুদ্ধে নিহত আত্মীয়স্বজনের শোক, গৃহযুদ্ধের আতঙ্ক এবং সংকটের মধ্যে থাকাটা তাদের মনোভাবকে আরও নেতিবাচক করে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে, সন্তান ধারণের ইচ্ছা প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি পুতিন সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর চেষ্টা করতে হবে এবং তরুণদের মধ্যে নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।
আগামী দিনের রাশিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তরুণ প্রজন্মের ওপর এবং যদি তারা অস্থিরতার মধ্যে সন্তানের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তবে দেশের জনসংখ্যা সংকট আরও গুরুতর হতে পারে।
মন্তব্য করুন