ভূরাজনীতিতে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলেই পরিচিত সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অতীতে পুতিনের প্রশংসাও করতে শোনা যায় রিপাবলিকান এই নেতাকে। এমনকি ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে নির্বাচনের আগে অনলাইন ক্যাম্পেইন চালানোর প্রমাণও মিলেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। যদিও ফলাফল বেরিয়ে আসার পর প্রকাশ্যে কোনো উচ্ছ্বাস দেখায়নি মস্কো। এর মধ্যেই পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ সেরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কী নিয়ে তাদের কথা হলো এটিই এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধ আর তীব্র না করার অনুরোধ করেন ট্রাম্প। পুতিনের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছেন নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে ইউক্রেনকে যুদ্ধের ময়দানে একা ছেড়ে না দিতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
এর আগে ইউক্রেনকে দেয়া মার্কিন সামরিক সহায়তার কড়া নিন্দা জানিয়ে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয় সুযোগ পেলে যুদ্ধ থামিয়ে দেয়ার কথাও জানান তিনি। তবে কীভাবে এমনটা করবেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কখনোই কিছু বলেননি।
আগামী ২০ জানুয়ারি ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ট্রাম্প। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে নিজের অভিমত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এ সময় ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে কী ঘটছে সে ব্যাপারে ট্রাম্পকে বিস্তারিত অবহিত করবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন এ কর্মকর্তা জানান, বাইডেন প্রশাসনের কাছে আগামী ৭০ দিন সময় আছে কংগ্রেসের কাছে কাছে আবেদন করার যাতে পরবর্তী প্রশাসন ইউক্রেন থেকে হাত গুটিয়ে না নেয়।
মার্কিন প্রশাসন যদি ইউক্রেন থেকে নিজেদের সহায়তা সরিয়ে নেয় তবে ইউরোপ আরও অস্থিতিশীল হবে বলেও জানান মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করার পর ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে।
গেল বছর ট্রাম্প জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে পুতিন কখনোই ইউক্রেন আক্রমণ করতেন না। রিপাবলিকান এ নেতা জানান শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনকে কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু এ প্রস্তাব ইউক্রেন প্রশাসন কখনোই গ্রহণ করেনি, এমনকি বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনও এমন কোনো প্রস্তাব কিয়েভের কাছে দেননি। এরই মধ্যে রুশ বাহিনী, ইউক্রেনের এক পঞ্চমাংশ এলাকা দখল করেছে।
রাশিয়া জানায়, দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে যুদ্ধ চলবে, অন্যদিকে ইউক্রেন রুশ বাহিনীর দ্বারা দখলকৃত অঞ্চল ফেরত চেয়ে আসছে।
মন্তব্য করুন