ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে তুরস্ক। এতে বিশ্বের ৫২টি দেশ স্বাক্ষর করেছে।
রোববার (০৩ নভেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘে দেওয়া এ চিঠিতে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ব্রাজিল, আলজেরিয়া, চীন, ইরান ও রাশিয়া।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, আমরা ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিক্রি বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি যৌথ চিঠি লিখেছি। ৫২টি দেশের স্বাক্ষর নিয়ে এ চিঠি আমরা ১ নভেম্বর জাতিসংঘে পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা আবার বলতে চাই যে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা মানে গণহত্যায় অংশ নেওয়া। জাতিসংঘে দেওয়া চিঠিটি তুরস্কের উদ্যোগে করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ব্রাজিল, আলজেরিয়া, চীন, ইরান ও রাশিয়া। এ ছাড়া আরব লীগ এবং অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এবং জাতিসংঘের অন্তর্গত বিভিন্ন সংস্থাও নথিতে স্বাক্ষর করেছে।
এর আগে গত মাসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে এই পদক্ষেপটি গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি কার্যকর সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে... দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’
মন্তব্য করুন