আকস্মিক বন্যায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে স্পেন। বিভিন্ন এলাকায় পানি সরে যাওয়ার পর একের পর এক মরদেহের সন্ধান মিলছে। এখন পর্যন্ত ১৫৮টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ংকর ঝড়-সম্পর্কিত বিপর্যয় পূর্ব স্পেন মোকাবিলা করছে। উদ্ধারকারী দলগুলো এখনও নিখোঁজদের সন্ধান করছে। কিন্তু পরিস্থিতির আকস্মিকতায় তারা অনেকটা অপ্রস্তুত।
স্পেনের অঞ্চলগুলো সহযোগিতার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী অ্যাঞ্জেল ভিক্টর টোরেস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ১৫৮টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক ডজন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ১ হাজার ২০০ জনের বেশি কর্মী ড্রোনের সাহায্যে ত্রাণ দিয়েছেন। মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এখনো ঝুঁকির মুখে আছে দেশটির বিভিন্ন এলাকা।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো, মানুষের জীবন বাঁচানো।’
গত মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের কিছু অংশে আট ঘণ্টায় এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে রাতে কিছু শহরে হঠাৎ বন্যার ভয়াবহতা বেড়ে যায়। বন্যার পানি কাদা ও ধ্বংসস্তূপ শহরে বয়ে আনে। এসবের নিচে চাপা পড়ে আছে মরদেহ। যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গেছে সেসব দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত। কাদামাটির মিশ্রিত জঞ্জাল শহরের রাস্তাগুলোতে স্তূপ হয়ে রয়েছে। বিলাশবহুল গাড়িও বিভিন্ন স্থানে উলটে পড়ে আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্যার্ত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বেশিকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পগেছে। এতে দেখো গেছে, বন্যার্ত এলাকার বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া পানির স্রোত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে গাছে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতদের সহযোগিতায় কয়েক ইউনিট সেনা মোতায়েন করেছে।
এ বন্যাকে আধুনিক ইতিহাসে স্পেনের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় বলা হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোকে আরও ঘন ঘন এবং ধ্বংসাত্মক করে তুলছে।
মন্তব্য করুন