বর্তমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে বেশ সচেতন দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এর মধ্যেই উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে। এমনকি চলমান ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে একের পর এক পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো।
তবে প্রবাদ আছে- যত গর্জে তত বর্ষে না। তেমনি পরমাণু হামলার হুমকি দেওয়া হলেও পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে রুশ বিজ্ঞানীদের ব্যর্থতার গল্পও রয়েছে। সম্প্রতি তেমনি এক ব্যর্থতার গল্প বেরিয়ে এসেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি রাশিয়া নিজেদের সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। নিজেদের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছিল মস্কো। ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে রুশ বাহিনীর ব্যর্থতার একটি চিত্র ফুটে উঠেছে।
স্যাটেলাইট চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের মাক্সার টেকনোলজিসের দ্বারা ধারণকৃত যা গত ২১ সেপ্টেম্বর নেওয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, উত্তর রাশিয়ার প্লেসেটস্ক কসমোড্রোমে উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে ২০০ ফুট চওড়া একটি গর্ত দেখা যায়। যা সেপ্টেম্বরের শুরুতে তোলা ছবিগুলোতে দেখা যায়নি। এটি মূলত একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য নকশা করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্নয়ন বিলম্ব হচ্ছিল।
রাশিয়ান পারমাণবিক বাহিনী প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত বিশ্লেষক পাভেল পডভিগ জানান, সবগুলো ইঙ্গিত পর্যবেক্ষণ করে বলা যায় এটা একটা ব্যর্থ পরীক্ষা ছিল। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র ও উৎক্ষেপণ সাইলোতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা সহযোগী টিমোথি রাইট জানান, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সাইলোর আশপাশের এলাকা ধ্বংস হওয়ায় এটি উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়। হতে পারে এটি উৎক্ষেপণের সময় সক্রিয় হতে ব্যর্থ হয়েছে অথবা এতে বড় ধরনের প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে।
১১৫ ফুট লম্বা সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটি পশ্চিমা বাহিনীর কাছে শয়তান-২ নামেও পরিচিত। এর পাল্লা ১৮ হাজার কিলোমিটার। ২০৮ টনের বেশি ওজন নিয়ে সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা যায়। রুশ গণমাধ্যম জানায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যমাত্রায় আঘাতের জন্য ১৬টি পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে পারে। পুতিন জানিয়েছিলেন এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার শত্রুদের কাছে নেই।
মন্তব্য করুন