মস্কোর বাণিজ্যিক এলাকায় একটি বহুতল ভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। ভবনটিতে তিনজন রুশ সরকারি মন্ত্রীর কার্যালয় রয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিন দিনে দ্বিতীয়বারের মতো ভবনটিতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ড্রোন হামলার ঘটনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা বলেছেন, ‘মস্কোর আরও যুদ্ধ, ক্ষতি এবং এমন আরও ড্রোন হামলার আশঙ্কা করা উচিত।’
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ‘আইকিউ’ টাওয়ার নামে পরিচিত। গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনায় রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, ডিজিটাল মন্ত্রণালয় এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় রয়েছে।
রয়টার্সের সংগৃহীত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ড্রোন হামলায় ক্রেমলিন থেকে ৩.৪ মাইল দূরে অবস্থিত আধুনিক এ স্থাপনার সম্মুখভাগে কাচের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। মস্কোর মেয়র সের্গেই সবিয়ানিন টেলিগ্রামের এক বার্তায় বলেন, ‘২১ তলার বাইরের দিককার কাচের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।’
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, মঙ্গলবার মস্কোর কাছাকাছি ওডিন্টসোভো এবং নারোফরমিনস্ক শহরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দুটি ড্রোন ভূপাতিত করে। তৃতীয় আরেকটি ড্রোন ‘অকেজো’ হয়ে ‘নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে’ মস্কো সিটি বাণিজ্য এলাকায় ভূপাতিত হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা’ আখ্যা দিয়ে এর জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। খবর গার্ডিয়ানের।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের রুশ এক উপদেষ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক ভিডিওবার্তায় জানান, বিশেষজ্ঞরা ভবনটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছেন এবং জানমালের নিরাপত্তার জন্য করণীয় নির্ধারণ করছেন।
মে মাসে ক্রেমলিন কমপ্লেক্সের ছাদে ড্রোন হামলার পর থেকেই নিয়মিত ড্রোন হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে মস্কো।
বড় কোনো ক্ষতি না হলেও নিয়মিত ড্রোন হামলার কারণে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে রাশিয়া। এতে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ ফলাফল নিয়েও নতুন সব প্রশ্ন উঠছে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত কিছু না বললেও এটি যে একটি ‘হুমকি’ তা স্বীকার করেছেন এবং পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
রাশিয়ার অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি ড্রোন হামলার পর থেকে আইকিউ টাওয়ারের কর্মকর্তারা কার্যালয়ের বাইরে কাজ করছেন। মস্কো সিটি বাণিজ্য এলাকার আধুনিক ভবনগুলো সাধারণত রাতে খালি থাকে। আইকিউ টাওয়ারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রেমলিনের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের চাইতে দুর্বল। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে প্রবল নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ছাদে ‘পানসির এস-১’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসানো হয়েছে।
ড্রোন হামলার জন্য সরাসরি দায় স্বীকার না করলেও ইউক্রেন এ নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছে।
মন্তব্য করুন