তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তা ইউরোপে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাশিয়ার অভ্যন্তরে পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করে মস্কো।
দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল হয়ে উঠছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়েও ইউক্রেনকে কাবু করতে পারেননি পুতিন। বরং পশ্চিমাদের সহায়তায় আরও অগ্রসর হচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনী।
সম্প্রতি রুশ ভূখণ্ডে ঢুকে ইউক্রেন বাহিনীর অভিযান পরিচালনা সেই ইঙ্গিত দেয়। আর এতে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক সব পশ্চিমা অস্ত্র। যার জেড়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়ে বসেছে রাশিয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার ভেতরে পশ্চিমা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অনুমতি দিয়ে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ সময় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তা ইউরোপে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলেও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেয় পরমাণু শক্তিধর মস্কো। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ভয়াবহ হামলা চালায় ইউক্রেন বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই রুশ ভূখণ্ডে বড় ধরনের কোনো বিদেশি হামলা ঘটনা।
ইউক্রেনের এমন হামলার পর কড়া জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন পুতিন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানান, পশ্চিমারা ইউক্রেন যুদ্ধকে আরও উসকে দিতে চাইছে। এমনকি পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার অনুরোধ বিবেচনা করে সংঘতাকে নিজেদের দুয়ারে ডেকে আনতে চাইছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই যুদ্ধ ইউক্রেনের সীমান্ত ছাড়িয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিলেন পুতিন। যদিও মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের সঙ্গে কোনো প্রকার সংঘাতে যেতে চান না বলেও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আমেরিকানরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে কথপোকথনে এমন অসামঞ্জস্যপূর্ণ কথা বলছে, খোদা না করুক যদি এমনটা ঘটে তাবে তা এককভাবে ইউরোপকে বেশি ক্ষতির মুখে ফেলবে।
এদিকে, আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার একটি পরিকল্পনার কথা জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে আলোচনায় ইউক্রেনকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই দলের প্রার্থীদের কাছে তিনি একটি ‘বিজয় পরিকল্পনা’ উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এমনটা জানান জেলেনস্কি।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জানান, তিন সপ্তাহ আগে রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের সেনাদের অনুপ্রবেশ সেই বিজয় পরিকল্পনারই অংশ। পরিকল্পনায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ও যুক্ত করা হবে। বিজয় পরিকল্পনায় কী কী থাকবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জেলেনস্কি।