তুরস্কের শত্রু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কিনতে তড়িঘড়ি চুক্তি করতে চাইছে। তুরস্কের ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনতে চায় গ্রিস। মার্কিন নির্বাচনের আগে গ্রিসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই চুক্তি বাস্তবায়নে তোড়জোড় শুরু করেছে।
গ্রিসের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ইআরটি জানিয়েছে, গেল ২৮ জুন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টি অনুমোদন করে গ্রিসের পার্লামেন্ট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি জো বাইডেন, কে বিজয়ী হবেন, তার ভিত্তিতে বদলে যেতে পারে অনেক সমীকরণ। বিশেষ করে, শত্রু-মিত্র দেশের তালিকায় আসতে পারে পরিবর্তন। এমন পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি করে, যে যার মতো সুবিধা আদায় করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। বাইডেন ক্ষমতায় থাকতেই সামরিক অস্ত্র কিনতে মরিয়া অনেক দেশ। তাদের বিশ্বাস, ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে বদলে যাবে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি।
বিভিন্ন দেশের এমন ধারণা অমূলকও নয়। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে, আমেরিকা ফার্স্ট নীতি হাতে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপরই যুদ্ধবিগ্রহ থেকে অনেকটা বেরিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ট্রাম্পের কারণেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর প্রত্যাহার ত্বরান্বিত হয়েছিল। এ জন্যই গ্রিস তড়িঘড়ি করছে।
জানা গেছে, পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়ার পর গ্রিসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার অনুমতি দেয়। এরপরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব ইকুপমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টকে মার্কিন নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। নির্বাচনের আগেই এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারলে ২০২৮ সালে প্রথম চালান পাবে গ্রিস। তবে প্রশিক্ষণের জন্য তখনও সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রেই থাকবে।
প্রশিক্ষণ শেষে বিমানগুলো পরে অ্যান্ড্রাভিডা বিমানঘাঁটিতে ২০৩০ সাল থেকে স্থায়ীভাবে রাখা হবে। এই বিমানঘাঁটি গ্রিসের পেলোপোন্নেসে উপদ্বীপের উত্তরপশ্চিম অংশে অবস্থিত। বিমানঘাঁটিটি খতিয়ে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের একটি দলের। ইআরটি জানিয়েছে, ৩৪৭ কোটি ডলারের চুক্তির আওতায় কারিগরি সহায়তা, পাইলটের প্রশিক্ষণের মতো বিষয় রয়েছে।
গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। আবার গাজা যুদ্ধ নিয়েও দুপক্ষের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছে দুই দেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে গ্রিস সফরে যান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। পাল্টা সফরে মে মাসে তুরস্ক আসেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে এখনও দুই দেশের দ্বিমত প্রবল।
মন্তব্য করুন