বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যার বয়স ৮১ বছর। প্রতিপক্ষ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বয়স ৭১। আর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বয়সটাও কাছকাছি। অর্থাৎ শক্তিশালী দেশগুলোর এসব ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা সবাই বয়সে প্রবীণ। শুধু এই তিন দেশেই নয়, ইউরোপ থেকে আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা, প্রতিটি দেশেই ক্ষমতাটা রয়েছে বয়স্ক নেতাদের হাতেই। কিন্তু তরুণদের বাদ দিয়ে বয়স্কদেরই কেন ক্ষমতায় বসানো হচ্ছে?
এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বিশ্বনেতা হলেন ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া। যার বয়স ৯১ বছর অর্থাৎ বাইডেনের চেয়ে তিনি মাপা এক দশকের বড়। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চেয়ে মাত্র এক বছরের ছোট এবং ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাসের বয়স ৮৮ বছর। সব মিলিয়ে বুড়োদের শাসন সমসাময়িক বিশ্বের একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তাহলে এর মানে কী এটিই দাঁড়াচ্ছে তরুণ রাজনীতিকরা নেতৃত্বহীন? উত্তরটা হচ্ছে—না। বিশ্বে তরুণ নেতৃত্ব যে একেবারেই নেই, তা নয়। বিশ্বের এই সময়ের সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সের গ্যাব্রিয়েল আটাল যার বয়স ৩৫ বছর।
তাহলে একটি প্রশ্ন সবার মনে ঘুরপাক খায়— বুড়ো রাজনীতবিদরা আসলে কি জাদু জানেন? আসলে তাদের মূলমন্ত্র হলো- জাতীয় সমস্যা সমাধানে তরুণদের চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ ও বেশি সক্ষম বয়স্ক রাজনীতিকরা। আর এই অভিজ্ঞতাই প্রবীণ নেতাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম করে তুলছে। যেটি যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনে বাইডেনের সরে না দাঁড়ানো, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পঞ্চমবারের মতো, নরেন্দ্র মোদির টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ই বলে দেয়।
ইতিহাসবিদ প্লুতার্কের আশঙ্কা ছিল অনভিজ্ঞ তরুণেরা ক্ষমতার আসনে বসলে বানের পানির মতো রাষ্ট্রীয় বিষয়ে না বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়বেন এবং বিভ্রান্তির স্রোতে জনতাকে তাদের সঙ্গে টেনে নিয়ে যাবেন। যদিও দেখা যাচ্ছে, প্লুতার্ক তরুণদের নেতৃত্ব নিয়ে যে ভয় ধরানো ঘটনাগুলোর কথা বলেছিলেন, এখন তরুণেরা নয় বরং ‘জনপ্রিয়’ প্রবীণ রাজনীতিকেরাই তা অহরহ ঘটিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিশ্ব মোড়লদের আসনে এত অভিজ্ঞ ও প্রবীন নেতা থাকা সত্বেও তারাই শান্তি প্রতিষ্ঠায় হিমসিম খাচ্ছেন।