কয়েক দশক ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে চাইছে তুরস্ক। বর্তমানে অঞ্চলটিতে ভূরাজনৈতিক কারণে বাড়ছে দেশটির গুরুত্ব। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপে তুরস্ককে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তুলছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্সি পেয়েছে পুতিন ঘনিষ্ঠ হাঙ্গেরি। ফলে নতুন করে জোটটিতে তুরস্কের সদস্যপদ নিয়ে জ্বলে উঠেছে আশার আলো। বলা হচ্ছে, প্রভাবশালী আঞ্চলিক জোটটির সদস্য হতে পারলে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারে এরদোয়ানের দেশ।
প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানেদর নেতৃত্বে বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের স্বর্ণযুগ পার করছে এক সময়কার উসমানীয় সম্রাজ্যভুক্ত হাঙ্গেরি। তুর্কি সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, অরবান ও এরদোয়ানের বন্ধুত্ব দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করে তুলছে। ফলে দেশটির প্রেসিডেন্সিতে আবারও আলোচনায় এসেছে তুরস্কের ইইউ সদস্যপদের বিষয়টি। ইইউর দায়িত্ব নিয়েই তুরস্কের সঙ্গে জোটটির অংশীদারত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে বুদাপেস্ট।
যদিও, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় জোটে নিজের প্রচুর বিরোধী তৈরি করেছে হাঙ্গেরি। এমনকি প্রায়সময়ই আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে আরবান। এমনকি যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা একমাত্র ইউরোপীয় দেশ হাঙ্গেরি। পাশাপাশি কিয়েভে সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিরোধীতাসহ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতাও করে আসছে বুদাপেস্ট প্রশাসন।
প্রেসিডেন্সি উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রোগ্রামে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের গুরুত্ব তুলে ধরে হাঙ্গেরি। সেখানে বলা হয়, উত্তর ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা এবং তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতামূলক ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক রক্ষা করাটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৌশলগত স্বার্থ। এ সময় হাঙ্গেরি ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের প্রার্থী রাষ্ট্রের মর্যাদা নিয়ে উভয়পক্ষের রাজনৈতিক আলোচনাকে উৎসাহিত করবে বলেও জানানো হয়। বলা হয় হাঙ্গেরি তার প্রেসিডেন্সিতে দ্বিপক্ষীয় সাধারণ স্বার্থগুলোতে তুরস্কের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা আরও গভীর করার জন্য কাজ করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছাড়াও বিতর্কিত সাইপ্রাস দ্বীপ নিয়েও তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা শক্তিশালী করতে চায় হাঙ্গেরি। দেশটি জানায়, তারা সাইপ্রাস সমস্যা নিয়ে মীমাংসাবিষয়ক আলোচনাকে গুরুত্ব ও এটিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করে যাবে।
দীর্ঘদিন ধরেই জাতিগত সংঘাতকে কেন্দ্র করে গ্রিক সাইপ্রিট ও তার্কিশ সাইপ্রিট দুই ভাগে বিভক্ত। জাতিসংঘের উদ্যোগে বেশ কয়েকদফা কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার পরও এ সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। উল্টো পশ্চিমাদেশগুলো এ সমস্যার জন্য একপাক্ষিকভাবে তুরস্ককে দায়ী করে আসছে।
মন্তব্য করুন