বিশ্বব্যাপী সংঘাত যত বিস্তৃত হচ্ছে, ততই বাড়ছে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের শঙ্কা। তেমনটি হলে পরমাণু যুদ্ধও অনেকটা নিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে, পরমাণু শক্তিতে কোন দেশ ঠিক কতটা সমৃদ্ধ? আর কোন দেশের কাছে কত বোমা মজুত রয়েছে, তা নিয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
'সুইডিশ থিংক ট্যাঙ্ক স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট' তথা এসআইপিআরআই-এর এক প্রতিবেদনের বরাতে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, ২০২৩ সালে চীনের কাছে ৪১০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল, চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০। অন্যদিকে, ভারতের কাছে মজুদ রয়েছে ১৭২টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র আর পাকিস্তানের কাছে ১৭০টি। এসআইপিআরআই-এর ইয়ারবুক ২০২৪ এর তথ্য অনুযায়ী নিজেদের পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডারকে আরও আধুনিক করে তুলছে নয়টি পরমাণু শক্তিধর দেশ। তারা হলো- রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরায়েল।
সদ্য প্রকাশিত এসআইপিআরআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সারা বিশ্বে ১২ হাজার ২২১টি ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৮৫টি ক্ষেপণাস্ত্র সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য অস্ত্রাগারে মজুত রয়েছে। ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়া- এই তিনটি দেশই ব্যালিস্টিক মিসাইলের উপর একাধিক ওয়ারহেড স্থাপন করার ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চীনের কাছে ৪১০টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ থাকলেও ২০২৪ সালের বেইজিংয়ের অস্ত্রাগারে মজুদ পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০। বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তা দ্বিগুণ হবে। এসআইপিআরআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট পরমাণু অস্ত্রের ৯০ শতাংশই রয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দখলে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা ৩ হাজার ৭০৮টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের মধ্যে ১ হাজার ৭৭০টি মোতায়েন করা হয়েছে এবং বাকিগুলো মজুত করা আছে। অন্যদিকে রাশিয়ার ৪ হাজার ৩৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭১০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড তাদের ভাণ্ডারে মজুত করা আছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ২ হাজার ১০০টি ওয়ারহেড ব্যালিস্টিক মিসাইল 'অপারেশনাল অ্যালার্টে' রাখা আছে।
বিচ্ছিন্ন কূটনীতির দেশ উত্তর কোরিয়ার কাছে রয়েছে ৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড। এসআইপিআরআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির কাছে যত পরমাণু উপাদান রয়েছে তা ৯০টি পরমাণু ওয়ারহেড তৈরির জন্য যথেষ্ট। অন্যদিকে ইসরায়েলের কাছেও পরমাণু অস্ত্র রয়েছে বলে জানায় এসআইপিআরআই। অন্যদিকে ইরানও চেষ্টা করছে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার।
মন্তব্য করুন