তাইওয়ানের বিষয়ে আরও রক্ষণশীল মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে চীন। দেশটি ভূখণ্ডের চারিপাশে একের পর এক নৌমহড়া চালানোর পর এবার কট্টর আইন পাস করেছে। ভূখণ্ডের স্বাধীনতা চাইলেই মৃত্যুদণ্ডের আইন করেছে চীন। শনিবার (২২ জুন) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষকে সমর্থনকারীদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিষয়টি বিচারিক নির্দেশিকায় যুক্ত করেছে চীন। ফৌজদারি অপরাধের বিশেষ গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে এ শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে চীন। ফলে এ ভূখণ্ডকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করতে শক্তিপ্রয়োগের কথাও জানিয়ে আসছে দেশটি। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভূখণ্ডের ওপর চাপ বাড়িয়েছে তারা। এমনকি তাইওয়ানের আশপাশে বেশ কয়েকটি সামরিক মহড়াও দিয়েছে চীন। গত মাসে তাওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে দায়িত্ব নেওয়ার পর সর্বশেষ মহড়া চালায় তারা।
চিনহুয়া জানিয়েছে, শুক্রবার বেইজিংয়ের জারি করা নির্দেশনায় দেশকে বিভক্ত ও বিচ্ছিন্নতা উসকে দেওয়ার জন্য তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থিদের শাস্তির কথা জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভূখণ্ডের স্বাধীনতার প্রচেষ্টায় মূল ভূমিকা পালনকারী এবং রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতিকারীদের মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, যারা তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষ নেবেন তাদের ১০ বছর থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
চীনের এমন আদেশ জারির পর তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তাইওয়ান। তারা জানিয়েছে, বেইজিং পুরো তাইওয়ানে কোনো আইনি এখতিয়ার রাখে না। এ ছাড়া বেইজিং নিয়ম মানতে যে নির্দেশনা দিয়েছে তা তাইওয়ানের জনগণের জন্য মানা বাধ্যতামূলক নয়।
তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনের এমন পদক্ষেপ তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে জনগণের মধ্যে সংঘাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য উসকানি হিসেবে কাজ করবে। এ পদক্ষেপ বেইজিং ও তাইওয়ানের মধ্যে সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক উন্নয়নে সহায়ক নয়।
চিনহুয়া জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং রাষ্ট্রকে বিভক্ত করে এমন কর্মকাণ্ড চালাতে নির্দেশ দেওয়া ব্যক্তিদের উদ্দেশ করে বেইজিং এমন নির্দেশনা দিয়েছে। শুক্রবার থেকেই এটি কার্যকর করা হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সান পিং এ নির্দেশিকা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ নির্দেশনা অনুসারে অভিযুক্ত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর আইনি পদক্ষেপের ধারালো খড়্গ সব সময় উঁচুতে ঝুলবে। তাইওয়ানের সব জনগণকে লক্ষ করে এটি জারি করা হয়নি। কেবল তাইওয়ানের স্বাধীনতা নিয়ে ওকালতি করা কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্য করে এটি জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন