কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আবারও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা

২০১৭ সালে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। ছবি : সংগৃহীত
২০১৭ সালে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। ছবি : সংগৃহীত

গত নভেম্বর থেকেই মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির সঙ্গে সংঘাত চলছে জান্তা বাহিনীর। দিনি দিনে এ সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় সংঘাতের বিস্তারে ব্যাপক ভয় ও শঙ্কা বিরাজ করছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে ফের বাংলাদেশে আসার প্রবণতাকে উসকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। খবর রয়টার্সের।

খবরে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা বিভিন্ন উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনের শীর্ষ নির্বাহী এবং বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এক সাক্ষাৎকারে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, কয়েকজন রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং শিবিরের রোহিঙ্গাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত— এ খবর সত্য।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দলে দলে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।

বর্তমানে এই রোহিঙ্গাদের টেকনাফের কুতুপালং ইউনিয়নের শরণার্থী শিবিরে রাখা হয়েছে। ঢাকার পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে পারবে না বাংলাদেশ। চীনের মধ্যস্থতায় আশ্রিত এই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

তবে বিভিন্ন কারণে এই প্রক্রিয়ায় বর্তমানে স্থবির অবস্থা চলছে; আর এর মধ্যেই রাখাইনে তীব্র সংঘাত শুরু হয়েছে আরাকান আর্মি এবং জান্তা বাহিনীর মধ্যে। সেই সংঘাতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা আরাকান আর্মি রাখাইনের একের পর এক শহর-গ্রামের দখল নিচ্ছে। গত সপ্তাহে রাখাইনের দুই সীমান্তবর্তী শহর বুথিডং এবং মংডুর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি।

এই দুই শহরে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা থাকেন। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, দুই পক্ষের যুদ্ধের জেরে মংডু ও বুথিডংয়ে আটকা পড়েছেন ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।

রয়টার্সকে মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগে ইউএনএইচসিআর আমাদের একটি চিঠি দিয়েছে। সেখানে ইউএনএইচসিআর বলেছে—রাখাইনের পরিস্থিতি উত্তরোত্তর অবনতি ঘটছে। সেখানে আরও রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুতির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে এবং তারা অসহায়। তাদের সুরক্ষা প্রয়োজন।

এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউএনএইচসিআরের চিঠির কেনো জবাব এখনো দেয়নি শরণার্থী, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশন। এ ইস্যুতে বাংলাদেশের সরকারের অবস্থান জানতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কেউই ফোন রিসিভ করেননি।

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নতুন কোনো রোহিঙ্গাকে আর আশ্রয় দেওয়া হবে না বলে যে নীতি নিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যে কারণে ইয়ামালকে পুরো ম্যাচ খেলাচ্ছে না স্পেন?

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আরেক ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

চমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের নির্মাণকাজ সেপ্টেম্বরে শুরু : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড়ে জবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ 

আকর্ষণীয় বেতনে রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট নেবে সিপিডি

যমুনায় পানি কমায় ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন

আ.লীগ সরকারের কাছে আলেম-ওলামারাও রেহাই পায়নি : টুকু

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বেরোবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

ইউরো ২০২৪ / স্টুটগার্টে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, পিতা-পুত্রের স্মরণীয় উদযাপন

বেসরকারি সংস্থায় চাকরির সুযোগ, বেতন ৬০ হাজার

১০

তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ইবি শিক্ষার্থীরা

১১

দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন ডিপজল

১২

বিপৎসীমার ওপরে টাঙ্গাইলের সব নদীর পানি

১৩

পিজিআরকে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

১৪

পেট্রোম্যাক্স এলপিজিতে নিয়োগ, পদসংখ্যা অনির্ধারিত

১৫

পঞ্চম দিনে কোটাবিরোধী আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা

১৬

বৃক্ষমেলার আড়ালে বাণিজ্য মেলা!

১৭

যমুনার পানি বেড়ে ডুবে যাচ্ছে বসতবাড়ি

১৮

আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু ভারত, উন্নয়নের চীন : কাদের

১৯

ভোটে বিজয়ী পেজেশকিয়ান, এরপর কী?

২০
X