সামরিক শক্তিতে চীনের ওপর আছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। তবে শত্রু দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। তাই এবার মোক্ষম এক কৌশল বেছে নিয়েছে চীন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, চীনের নতুন কৌশল মরণবান হতে পারে পশ্চিমাদের জন্য। তাই চীনকে মোকাবিলায় সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা।
পশ্চিমাদের টক্কর দিতে গেলে সব দিক থেকেই পারদর্শী হতে হবে। তবে বহু বছর ধরেই একটি খাত চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের পাইলটদের দক্ষতা এবং কারিগরি সক্ষমতা পশ্চিমাদের টক্কর দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
তাই এবার পশ্চিমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাইলটদের ভাড়া করে আনছে চীন। উদ্দেশ্য নিজ দেশের পাইলটদের সক্ষম করে তোলা।
চীনের এমন কৌশল বেছে নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ গোয়েন্দা অংশীদাররা সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলছে, নিজের বিমানবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে পশ্চিমা সামরিক পাইলট এবং অন্য সেক্টরের সদস্যদের নিয়োগ দিচ্ছে চীন।
সম্প্রতি তথাকথিত ফাইভ আইস নেশন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এক যৌথ বুলেটিনে এমন সতর্কতা উচ্চারণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাইলটরা চীনের সামরিক কর্মকর্তাদের এয়ার কমব্যাট কৌশল থেকে শুরু করে একটি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারে কীভাবে অবতরণ করা যায়, সেগুলো শেখাতে পারবে। এ ছাড়া পশ্চিমাদের যুদ্ধ কৌশল কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, এসব পাইলটদের কাছে তারও একটা ধারণা পাবে চীন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিন সিং বলেছেন, প্রশিক্ষণের সময় যে মূল্যবোধ শেখানো হয়েছে, আমাদের পাইলটরা সেটা সব সময় সমুন্নত রাখবে এবং তারা তাদের প্রশিক্ষণ কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরই দেওয়া অব্যাহত রাখবে বলে আশা করে পেন্টাগন। চীনের এমন কর্মকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা হুমকি বলেও মনে করেন পেন্টাগনের এই কর্মকর্তা।
দক্ষিণ আফ্রিকা, সিঙ্গাপুর ও লাওসের মতো তৃতীয় দেশে ব্যক্তিগত কোম্পানি তৈরি করেছে চীন। এসব কোম্পানির মাধ্যমে পশ্চিমা পাইলটদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর তারা চীনের সামরিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। তারা দেশে ফিরে গিয়ে অন্য পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেয়। সামরিক পাইলট, ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার, এয়ার অপারেশন সেন্টার কর্মকর্তা এমনকি টেকনিক্যাল এক্সপার্টদেরও নিয়োগ দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই কৌশল মোকাবিলায় কিছু থার্ড পার্টি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল। কিন্তু কৌশল খাটিয়ে অন্য পন্থা বের করেছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ভিন্ন নামে ভিন্ন স্থানে আবারও কার্যক্রম চালিয়ে সেই নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটাতে সক্ষম হচ্ছে চীন। আবার নিয়োগের মধ্যেও ভিন্ন পথ খুঁজে বের করেছে বেইজিং।
মন্তব্য করুন