পৃথিবীতে অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। কিছু ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরের জন্য উপকারী, আবার কিছু আছে ভয়ংকর ক্ষতিকারক।
এর মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া যা মানবদেহে সংক্রমিত হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এবার এমনই এক বিরল ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ মিলল।
এটি মূলত এক প্রকার মাংস খেকো, যা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় কাবু করে ফেলে।
গ্রুপ এ স্ট্রেপ্টোকোকাস বা গাস নামের এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে যে রোগ হয়, তার নাম স্ট্রেপ্টোকোকাল টক্সিক শক সিনড্রোম বা এসটিএসএস। গাস নামের এই ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন প্রজাতির।
কিছু কিছু মূলত শিশুদের আক্রান্ত করে। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের গলা ফুলে যায়, সঙ্গে ব্যথাও থাকে। শিশুদের এই অবস্থাকে বলা হয় ‘স্ট্রেপ থ্রোট’। তবে এই প্রজাতিগুলো প্রাণঘাতী নয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি জাপানে মাংসখেকো এ ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে এসটিএসএসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৪১ জন মানুষ। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফেকশাস ডিজিজের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই বাড়ছে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। এতে যে হারে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে, তাতে চলতি বছর দেশটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
টোকিও উইম্যান্স মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিভাগের অধ্যাপক কেন কিকুচি ব্লুমবার্গ জানান, ব্যাকটেরিয়ার কিছু প্রজাতি রয়েছে, যেগুলো মূলত আক্রমণ করে ৫০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী মানুষকে।
এর সংক্রমণে প্রথমে গলা এবং পরে মাংসপেশিতে ব্যথা শুরু হয়। হাত-পা-মুখ ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তচাপ নেমে আসে। এক পর্যায়ে মাংশপেশিতে পচন ধরে, শ্বাস-প্রশ্বাসেও সমস্যা হয় এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে। এতে রোগীর মৃত্যু ঘটে দ্রুত।
অধ্যাপক কেন কিকুচি আরও জানান, এসটিএসএসে আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ৩০ শতাংশই মারা যান। জাপানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া গাস।
জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইউরোপের পাঁচটি দেশে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এ থেকে সুরক্ষা পেতে হাত পরিষ্কার রাখা এবং শরীরের যে কোনো ক্ষতস্থান খোলা অবস্থায় না রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
মন্তব্য করুন