কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

এল নিনোর কারণেই বাংলাদেশে এত গরম!

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে দেশের তাপমাত্রা এতটাই বাড়ছে যে অনেকে এটি সহ্য করতে পারছেন না। ফলে হিটস্ট্রোকসহ অন্যান্য স্বাস্থগত ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। শুধু বাংলাদেশ নয়, তালিকায় আছে ভারত, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড। এই দেশগুলোর অবস্থাও একই।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এসব দেশে এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি তাপ পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা ‘এল নিনোর’ কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এল নিনো এই অঞ্চলে উষ্ণ পানি ও শুষ্ক অবস্থা নিয়ে আসে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো- এল নিনো কী? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এল নিনো হলো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। এটির মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, সমুদ্রের তাপমাত্রা, গতি, মহাসাগরীয় স্রোত, উপকূলীয় মৎস্যসম্পদের স্বাস্থ্য এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার এবং এরও বাইরের অঞ্চলের ওপর প্রভাব পড়ে। এল নিনো দুই থেকে সাত বছরের বিরতি দিয়ে অনিয়মিতভাবে হয়ে থাকে। এটি কোনো নিয়মিত চক্র নয় অথবা এ নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

পেরুর উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা এল নিনো সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন সমুদ্রের পানির অস্বাভাবিক উষ্ণতা দেখে। আবহাওয়ার এই বিশেষ অবস্থাকে স্প্যানের অভিবাসীরা এল নিনো নামে ডাকতেন। যার বাংলা অর্থ ‘ছোট বালক’। পরবর্তীতে এল নিনোর মাধ্যমে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি বোঝানো শুরু হয়। এল নিনোর কারণে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় দেশ পেরু, ইকুয়েডর ও চিলির উপকূলে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে এক প্রকার উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ করা যায়।

এই উষ্ণ স্রোতের কারণে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী শীতল সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এল নিনোর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা বা অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিবর্ষণও ঘটে থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আরও ৭২ ঘণ্টা এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ২৮ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বৃদ্ধি পেতে পারে।

গত বছরের এপ্রিল মাসে জলবায়ুবিদরা এল নিনোর ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ২০২৩ সালে এটির প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি ২০২৩ সালে প্রভাব না পড়ে তাহলে ২০২৪ সালে এটি বেশ ভালোভাবে পরিলক্ষিত হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপির তিন সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

তারুণ্যের সমাবেশ দিয়ে ফের মাঠে নামছে বিএনপির তিন সংগঠন 

ফাঁসির দণ্ডাদেশ থেকে কারামুক্ত বিএনপি নেতার মৃত্যু

হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ, সন্তানকে নিয়ে পালালেন স্বামী

কাশ্মীর সীমান্তে সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র / জানা গেল তৃতীয় দফার আলোচনার বিস্তারিত

এফ-১৬ দিয়ে ইরানকে রুখে দিয়েছিল ইসরায়েল

মেসির বিশ্রামের দিনে ঘরের মাঠে মায়ামির নাটকীয় হার

চট্টগ্রামে শেষবারের মতো রেফারির ভূমিকায় ডেভিড বুন

এনসিপির আইনজীবী উইংয়ের কো-অর্ডিনেটর হলেন অ্যাডভোকেট শাকিল

১০

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকায় ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না

১১

ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের মহড়ায় নেমেছে ভারত

১২

ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েই চলছে, আজও অস্বাস্থ্যকর

১৩

চট্টগ্রামে টস হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে তিন পরিবর্তন

১৪

সাগরে দ্বীপ দখল করল চীন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে উত্তেজনা

১৫

জুমার নামাজে খুতবা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও 

১৬

নীরবতা ভেঙে ইরেশ যাকেরের পাশে দাঁড়ালেন বাঁধন

১৭

সাতক্ষীরায় ৪৪ মামলা ও নির্যাতনের শিকার যুবদল নেতা আইনুল ইসলাম 

১৮

কেমন থাকবে আজ ঢাকার আবহাওয়া

১৯

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ইউআইইউ 

২০
X