আজারবাইজানের হাতে পরাজিত হওয়ার পর হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনীয় নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পাশের দেশ আর্মেনিয়া চলে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলটির কয়েক হাজার মানুষ সে দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। খবর রয়টার্স।
কারাবাখ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ হলেও সেটি জাতিগত আর্মেনীয় অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে ১ লাখ ২০ হাজার আর্মেনীয় বসবাস করেন। বিরোধপূর্ণ এ অঞ্চল নিয়ে এরই মধ্যে দুটি যুদ্ধে জড়িয়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। প্রথমটি ১৯৯০-এর দশকে এবং দ্বিতীয়টি ২০২০ সালে। ২০২০ সালের যুদ্ধে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগে কারাবাখের বেশকিছু অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় আজারবাইজান।
সম্প্রতি এ অঞ্চলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার সেখানে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেয় আজারবাইজান। সামরিক অভিযানের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আর্মেনীয়রা আত্মসমর্পণ করলে কারাবাখের ওপর সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। একই সঙ্গে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুদেশ। যুদ্ধবিরতির পরপর আর্মেনীয়দের অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা জানায় আজারবাইজান। তবে তাদের এমন আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারেননি কারাবাখের নেতারা।
রোববার কারাবাখ রিপাবলিকের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান বলেছেন, আমাদের জনগণ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকতে চায় না। ৯৯ শতাংশ মানুষ আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি ছেড়ে চলে যেতে চায়।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার হাজার হাজার আর্মেনীয় নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে আর্মেনিয়ায় যেতে পেট্রল পাম্প ও সড়কে ভিড় করেছেন। তারা বাসে ও ট্রাকে করে দেশ ছাড়ছেন।
আর্মেনিয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন এমন শরণার্থীরা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের রাষ্ট্রের ইতিহাস শেষ হয়ে গেছে। আনা আগোপিয়ান নামে এক ব্যক্তি বলেন, কেউ আর ফিরে যাবে না। কারবাখের প্রসঙ্গ এখন চিরতরে শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে কারাবাখের আর্মেনীয়দের স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আর্মেনিয়া সরকার। তারা বলছে, সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার শরণার্থী তাদের দেশে প্রবেশ করেছেন।
মন্তব্য করুন