কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা ভারত-পাকিস্তানকে আবারও মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ দুটির পাল্টাপাল্টি অবস্থান নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। এমনকি যুদ্ধ হলে কোন দেশ জিতবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। এমনকি কোন দেশের কাছে কী কী বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এরই মধ্যে মালয়েশিয়াভিত্তিক ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক ২০২৫-কে ভিত্তি ধরে করা ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে আছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের হাতে আছে ১৪০-১৫০টি পরমাণু অস্ত্র। আর ভারতের আছে ১৩০-১৪০টি। তবে সার্বিক সক্ষমতায় ভারত বেশি শক্তিশালী।
জনশক্তি, সামরিক সরঞ্জাম, অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক অবস্থাসহ ৬০টির বেশি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ১৪৫টি দেশকে মূল্যায়ন করা হয়েছে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচকে। সামগ্রিক র্যাঙ্কিংয়ে ভারত বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ ও সক্ষমতা সূচকে দেশটির স্কোর ০ দশমিক ১১৮৪। আর সামরিক শক্তিতে পাকিস্তানের অবস্থান ১২তম। সক্ষমতা সূচকে পাকিস্তানের স্কোর ০ দশমিক ২৫১৩।
সামরিক-বেসামরিক জনশক্তির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা ১৪০ কোটি। এর মধ্যে সক্রিয় জনশক্তি ৬৬ কোটি ২০ লাখ ও সক্রিয় সেনা ১৪ লাখ ৬০ হাজার, যা বিশ্বে দ্বিতীয়। এ ছাড়া রিজার্ভ সেনা রয়েছে ১১ লাখ ৬০ হাজার। এটি বিশ্বে সপ্তম। আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য ২৫ লাখ ৩০ হাজার, যা বিশ্বে দ্বিতীয়। মোট সামরিক (সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনী) জনবল ৫১ লাখ।
বিপরীতে পাকিস্তানের জনসংখ্যা ২৫ কোটি ২০ লাখ, যা বিশ্বে পঞ্চম। সক্রিয় জনবল ১০ কোটি ৮০ লাখ। সক্রিয় সেনা ৬ লাখ ৫৪ হাজার। এটি বিশ্বে সপ্তম। রিজার্ভ সেনা ৬ লাখ ৫০ হাজার। রেঞ্জার্স, ফ্রন্টিয়ার কোরসহ মোট সামরিক শক্তি ১৭ লাখ (সক্রিয়, রিজার্ভ ও আধা সামরিক বাহিনী)। ভারতের জনবল পাকিস্তানের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি এবং রিজার্ভ ও আধা সামরিক বাহিনীও বড়। পাকিস্তান যদিও কম জনবল নিয়ে কাজ করে, তবে তাদের মধ্যে অনিয়মিত বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে।
প্রতিরক্ষা বাজেটেও এগিয়ে ভারত। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভারতের বাজেট ছিল ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। পাকিস্তানের বাজেট ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার। দু’দেশের মধ্যে ১৯৪৭, ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালে প্রচলিত ঘরানার যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে। ভারতের ট্যাঙ্ক ৪ হাজার ৬১৪টি। সাঁজোয়া যান ১ লাখ ৫১ হাজার ২৪৮টি। কামান ৯ হাজার ৭১৯টি। বিশেষ বাহিনীর মধ্যে আছে প্যারা এসএফ, ঘাতক ফোর্স, এমএআরসিওএস।
পাকিস্তানের হাতে আছে ১৪০-১৫০টি পরমাণু অস্ত্র। আর ভারতের আছে ১৩০-১৪০টি পরমাণু বোমা। পাকিস্তানের ট্যাংকের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪২টি। সাঁজোয়া যান আনুমানিক ৫০ হাজার। ৩৭৫ স্বয়ংক্রিয় হাউইটজারসহ কামান রয়েছে ৪ হাজার ৪৭২টি।
ট্যাংক, সাজোয়া যান ও কামানে সংখ্যাগত দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত। ভারতের মোট যবিমান ২ হাজার ২২৯টি। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান ৫১৩-৬০৬টি। পাকিস্তানের মোট বিমান ১ হাজার ৩৯৯ থেকে ১ হাজার ৪৩৪টি। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান ৩২৮-৩৮৭টি।
মন্তব্য করুন