চীনের বিরুদ্ধে এবার আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধে আপাতত সবাইকে ছাড় দিলেও ট্রাম্পের রোষানল থেকে মুক্তি পায়নি চীন। তাই ট্রাম্পকে ঠেকাতে নতুন কৌশলে এগোচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে হাত মেলাতে চাইছেন তিনি।
ইরানের সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেইজিং সফরে যাচ্ছেন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের মধ্যে আরাঘচির এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরের প্রাক্কালে চীন-ইরান সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত দিচ্ছে বেইজিং। সোমবার (২১ এপ্রিল) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, তেহরান-বেইজিং সম্পর্ক বহুমাত্রিকভাবে গভীর হয়েছে এবং তার দেশ পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও জোরদার করতে আগ্রহী।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই জানান, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির এই সফরের মূল লক্ষ্য ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের চলমান পরোক্ষ আলোচনা ও সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে বেইজিংকে অবহিত করা। তিনি আরও জানান, ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে ইরান নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
একটা সময় মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অনেকটাই উদাসীন ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই সুযোগে এই অঞ্চলে নিজের বলয় বাড়াতে শুরু করে চীন। একপর্যায়ে চরম বিরোধপূর্ণ দুই মুসলিম দেশ সৌদি আরব ও ইরানের ভাঙা সম্পর্ক ফের জোড়া লাগাতেও সাহায্য করে জিনপিংয়ের দেশ। এখন এককভাবে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগী হয়েছে বেইজিং।
নিজেদের পরমাণু ইস্যুতে চীনকে বার বার পাশে পেয়েছে ইরান। গেল কয়েক বছরে ইরান ও চীনের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব জোরদার হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ২৫ বছরের একটি সহযোগিতা চুক্তিও রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ইরানে অবকাঠামো, জ্বালানি, প্রযুক্তি, এবং পেট্রোকেমিক্যাল খাতে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এবং বিনিময়ে চীন স্বল্প দামে ইরানের তেল পাবে।
এই চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন খাতে যৌথ প্রকল্প ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিস্তারে সহায়ক হয়েছে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ উভয় দেশকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন