শক্তিশালি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে মিয়ানমারে। এর প্রভাবে কেঁপে উঠেছে থাইল্যান্ডসহ আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারে অন্তত ১৪৪ জন নিহত হয়েছেন, এছাড়া আহত হয়েছেন ৭ শতাধিক মানুষ। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং-এর বরাত দিয়ে এই পরিসংখ্যান জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মিয়ানমার সরকার সূত্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পে অসংখ্য অবকাঠামো ধসে পড়েছে। ভবন ধসে শুধু নাইপিতাও শহরে ৯৬ জন মারা গেছেন, এছাড়া সাইগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন মারা গেছেন।
সরকার বলছে, ক্ষয়ক্ষতির এই পরিসংখ্যান নির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন এলাকায় এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করা হচ্ছে। মিয়ানমারের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মিয়ানমারের মান্দালয় প্রদেশের ফো শিং মসজিদসহ অন্তত তিনটি মসজিদ ধসে পড়েছে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমবার তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। এর কিছুক্ষণ পরই দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যেটি ছিল ৬ দশমিক ৪ মাত্রার। মিয়ানমারের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ ওই অঞ্চলের অন্যান্য স্থানেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর উপর নির্মিত ৯১ বছর পুরোনো আভা ব্রিজ ধসে পড়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে মিয়ানমারে ভূমিকম্পে কেঁপেছে বাংলাদেশও। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৫৯৭ কিলোমিটার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা উৎপত্তি স্থলে ছিল ৭.৭। এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এরপর একটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭.২ কিলোমিটার দূরে, যার জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। মান্দালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেনি।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টগুলোতে ধসে পড়া ভবন এবং শহরের রাস্তায় ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে পোস্টগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
মন্তব্য করুন