পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (২২ মার্চ) কাবুলে পাকিস্তানের বিশেষ দূত মুহাম্মদ সাদিক এবং আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলবি আমির খান মুত্তাকি এই সমঝোতায় পৌঁছান।
রোববার (২৩ মার্চ) পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, নিরাপত্তা উদ্বেগে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নাজুক হয়ে ওঠার পর কূটনৈতিক সম্পর্ক উজ্জীবিত করতে পাকিস্তানি দূত সাদিক তিন দিনের এক সফরে প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানে গিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং আফগান শরণার্থীদের বিষয়ে চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উভয় দেশ সম্মতি জানিয়েছে এবং কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। বৈঠকের পরে উভয় পক্ষ একে অপরের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সম্পর্ক বাড়ানোর এবং দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
পাকিস্তানি দূত সাদিকের তিন দিনের সফর আফগানিস্তানে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তপ্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রয়াস হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে সম্পর্ক কিছুটা নাজুক হয়ে পড়েছিল, তবে এই বৈঠকটি তা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে জানায়, তারা উভয় দেশের মধ্যে যৌথ বৈঠক এবং প্রতিনিধিদের মধ্যে বিনিময়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর সমাধান করতে চায়। এছাড়া, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ট্রানজিটের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তবে, বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয় দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা উদ্বেগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের সীমান্তবর্তী তোরখাম বন্দর পুনরায় চালু করার মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করেছে, যা ২১ ফেব্রুয়ারি একটি নির্মাণকাজ নিয়ে বিরোধের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া, আফগান শরণার্থীদের মর্যাদাও আলোচনার একটি প্রধান বিষয় ছিল। বর্তমানে পাকিস্তানে প্রায় ৩১ লাখ আফগান শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে এবং আগামী মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
এই বৈঠকটি উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং কূটনৈতিক মিত্রতার ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন