রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের বিভিন্ন খাতে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে সামরিক খাতে দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া অনেক বেশি। তবে এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। মূলত ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার পর কিয়েভের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ। এমতাবস্থায় তুরস্ক বলছে, প্রয়োজন পড়লে ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে তারা।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সংঘাত ঘিরে কৌশলগত অবস্থান বজায় রেখেছে তুরস্ক। সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন-ন্যাটোর সদস্য এই দেশ, জোটের অন্য সদস্য ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাঝে ভারসাম্য রেখে চলছে। এর আগে ইউক্রেনকে বায়রাকতার টিবি-টু ড্রোনসহ বিভিন্ন সামরিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়েছে তুরস্ক।
তবে সেনা মোতায়েন করলে তা তুরস্কের নীতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে আঙ্কারা বারবার বলে এসেছে, তারা ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তুরস্কের সম্ভাব্য এই পদক্ষেপ নিয়ে এখনো মুখ খোলেনি মস্কো। তবে তুরস্ক সামরিকভাবে জড়িয়ে পড়লে মস্কো ও আঙ্কারার মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ রোববার বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেনে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেওয়ার জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর কথা বিবেচনা করবে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্টারমার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যে কোনো যুদ্ধবিরতি রক্ষার জন্য ’ইচ্ছুকদের জোট’ গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এর আগে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের ইচ্ছা প্রকাশ করে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। এই সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবগুলো তখনই সামনে আসছে যখন ইউক্রেন ও ইউরোপের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার উপায় খুঁজে বের করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি সহইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ব্রাসেলসে সাক্ষাৎ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থনের ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট এবং অবশ্যই এটা খুব তাড়াতাড়ি হতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমি অবশ্যই খুব স্পষ্টভাবে, প্রকাশ্যে, বারবার বলেছি, আমরা ইউক্রেনে যে কোনো শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের কথা বিবেচনা করব।
আলবানিজ বলেন, অস্ট্রেলিয়া মঙ্গলবার প্যারিসে প্রতিরক্ষা প্রধানদের বৈঠকে একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি পাঠাবে, যেখানে তারা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের বিষয়ে আলোচনা করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের উপর তিন বছর ধরে মস্কোর আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য রাশিয়ান নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সরাসরি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর জন্য জোর প্রচারণা শুরু করেছে।
মন্তব্য করুন