ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চলাকালে ফিলিপাইন বিমানবাহিনীর একটি এফএ-৫০ ফাইটার জেট যুদ্ধবিমান নিখোঁজ হয়ে গেছে।
নিখোঁজ হওয়া ওই যুদ্ধবিমানে দুই পাইলট ছিলেন এবং এটি একটি রাতের বিশেষ যুদ্ধ অভিযানে অংশ নিতে গিয়েছিল, যেখানে ফিলিপাইন সেনারা দেশটির বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছিল।
এই ঘটনার পর থেকে বিমানটির খোঁজে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে, তবে এখনো বিমানটির অবস্থান সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিপাইনের বিমান বাহিনীর এফএ-৫০ ফাইটার জেটটি স্থানীয় সময় সোমবার (৩ মার্চ) রাতে এক কৌশলগত সামরিক অভিযান চলাকালীন অন্যান্য বাহিনীর ফাইটার জেটের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে এবং নির্ধারিত লক্ষ্যস্থলে পৌঁছানোর আগে যুদ্ধবিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায়।
এ সময় অন্য ফাইটার জেটগুলো নিরাপদে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও নিখোঁজ যুদ্ধ বিমানটি সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। বিমানবাহিনী তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিস্তারিত তথ্য জানাতে অস্বীকার করেছে।
ফিলিপাইনের একজন সামরিক কর্মকর্তা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, ঘটনাটি দক্ষিণ ফিলিপাইনের এক প্রদেশে ঘটেছে, যেখানে কমিউনিস্ট গেরিলাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহবিরোধী অভিযান চলছিল।
তবে এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অস্বীকার করেছেন, কারণ তার কাছে বিষয়টি জনসমক্ষে আলোচনা করার কোনো অনুমতি ছিল না।
বিমান বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল মা. কনসুয়েলো কাস্টিলো সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা আশাবাদী যে শিগগিরই বিমানটি এবং পাইলটদের খুঁজে বের করতে পারব। এ সংকটময় সময়ে আমরা আপনাদের সবাইকে আমাদের সঙ্গে প্রার্থনায় একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এদিকে এই ঘটনাটি ফিলিপাইনের বিমানবাহিনীর জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা হতে পারে, কারণ গত কয়েক বছরে এফএ-৫০ জেটগুলো নানা গুরুত্বপূর্ণ অভিযান ও পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ফিলিপাইনের ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১২টি এফএ-৫০ মাল্টি-পারপাস ফাইটার জেট ১৮.৯ বিলিয়ন পেসো (৩৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যে ক্রয় করেছিল। এটি ছিল তখনকার সময়ের একটি বৃহৎ সামরিক আধুনিকীকরণ কর্মসূচির অংশ, যা তহবিলের অভাবে একাধিকবার পিছিয়ে পড়েছিল।
ফিলিপাইনের এফএ-৫০ জেটগুলো শুধু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ব্যবহার হচ্ছে না, একই সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোতে এবং বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর পেট্রোলিংয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এখনো পর্যন্ত এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, এই দুর্ঘটনার পর বাকি এফএ-৫০ জেটগুলো চালু থাকবে নাকি সেগুলো মাটিতে রাখা হবে। তবে বিমানবাহিনী আশা করছে, শিগগিরই তারা এই সংকট থেকে উদ্ধার পাবে এবং পাইলটরা নিরাপদে ফিরে আসতে পারবে।
ফিলিপাইনের জনগণের জন্য এই সংকটময় সময়ে প্রার্থনা এবং সহানুভূতির আহ্বান জানিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে, যাতে শিগগিরই বিমানটি এবং পাইলটদের খুঁজে পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন