কোম্পানিতে অবিবাহিত আর কোনো কর্মীই রাখা হবে না। চাকরি বাঁচাতে হলে করতে হবে বিয়ে। আর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিয়ে করতে না পারলে চাকরিটাই থাকবে না। চাকরি টিকিয়ে রাখতে এমনই অদ্ভুত এক শর্ত বেঁধে দিয়েছে একটি কোম্পানি। সহস্রাধিক কর্মীর ওই কোম্পানির এমন ঘোষণায় পড়ে গেছে হইচই।
বয়স বাড়ছে কিন্তু তরুণ-তরুণীরা বিয়ে করছে না। এ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই চীন সরকারের। বিয়ের হার বাড়াতে তাই জারি করা হয়েছে নির্দেশনাও। সেই নির্দেশনাই অক্ষরে অক্ষরে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় চীনের শ্যাংডং প্রদেশের শুনতিয়ান কেমিক্যাল গ্রুপ।
কোম্পানিটি তার কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে, অবিবাহিত কিংবা ডিভোর্সি কারোরই ঠাঁই হবে না তাদের প্রতিষ্ঠানে। সেপ্টেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই কোম্পানির ২৮ থেকে ৫৮ বছরের কেউ অবিবাহিত থাকতে পারবে না। প্রথমে জুন মাস পর্যন্ত সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। পরে জানানো হয়, সেপ্টেম্বর মাসের ডেডলাইনের পরও কেউ যদি অবিবাহিত থাকে, তাহলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে।
কোম্পানির ঘোষণায় বলা হয়, বিয়ের হার বাড়াতে সরকারের আহ্বানে সাড়া না দেওয়া অনুগত না থাকার লক্ষণ। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করা কোম্পানিটি লিনয়ি শহরের শীর্ষ ৫০টি কোম্পানির একটি।
শুনতিয়ান কেমিক্যাল গ্রুপ এমন নির্দেশনা জারির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে যায়। পরে গেল ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যান সরকারি কর্মকর্তারা। এরপরই কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এমন নোটিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর বৈবাহিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে কাউকেই চাকরিচ্যুত করা হয়নি। কোম্পানিটির এমন নোটিশ শ্রম আইন ও শ্রম চুক্তি আইনের লঙ্ঘন বলেও জানিয়েছেন একজন সরকারি কর্মকর্তা।
চীনে দিন দিন কমছে বিয়ের হার। গেল বছর দেশটিতে ৬১ লাখ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি আগের বছরের ৭৬ লাখ ৮০ হাজারের চেয়ে প্রায় ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কম। তবে বিয়ের হার কমলেও বেড়েছে সন্তান জন্মদানের হার। ২০২৪ সালে চীনে রেকর্ড ৯৫ লাখ ৪০ হাজার নবজাতকের জন্ম হয়েছে। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে এত শিশুর জন্ম হলো।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইয়ার অব দ্য ড্রাগনের কারণে শিশু জন্মহার বেড়ে গেছে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিয়ের আগ্রহ কমে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা চার হাত এক করতে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে। তারপরও তরুণ-তরুণীরা বিয়ে করতে চাইছে না।
সূত্র : এনবিসি নিউজ
মন্তব্য করুন