অফিস নয় যেন ভ্রমণযাত্রা। সপ্তাহে ৫ দিনই বিমানে চড়ে যাওয়া-আসা করেন অফিসে। স্বামী আর দুই সন্তানকে সামলে এভাবেই অফিস করে যাচ্ছেন এক নারী। তার নাম র্যাচেল কৌর। বিমানে করে প্রায় ৪০০ কিলোমিটারের পথ উড়াল দিতে হয় তাকে। বাসা থেকে অফিসে যাওয়া-আসার এমন ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও দিব্যি যেন নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন র্যাচেল।
মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে থাকেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত র্যাচেল। কিন্তু তার অফিস সেপাংয়ে। সেখানে তিনি এয়ারএশিয়া এয়ারলাইন্সের ফাইন্যান্স অপারেশন্স বিভাগের একজন অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার। বাসা থেকে অফিস, এভাবে যাওয়া-আসায় র্যাচেলকে পাড়ি দিতে হয় এই দীর্ঘ পথ। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে যেতে হয় এয়ারপোর্টে। এরপর ৩০-৪০ মিনিট থাকতে হয় আকাশে। এভাবে ঘুম থেকে ওঠার প্রায় ৪ ঘণ্টা পর অফিসে পৌঁছান র্যাচেল।
কাজ শেষে আবারও বিমানে চড়ে ফেরেন বাসায়। পরিবার বিশেষ করে তার ১১ ও ১২ বছর বয়সী দুই সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর তাড়না থেকেই এমন পথ বেছে নিয়েছেন র্যাচেল। এর আগে কুয়ালালামপুরে বাসা ভাড়ায় থাকতেন তিনি। কিন্তু তখন সন্তানদের সঙ্গে শুধু সাপ্তাহিক ছুটিতেই দেখা হতো। তবে সন্তানরা বড় হতে থাকায় তাদের সঙ্গ পাওয়ার ইচ্ছাও র্যাচেলের বাড়তে থাকে।
র্যাচেল ২০২৪ সালের শুরুর দিকে বিমানে করে অফিসে যাওয়া আসার সিদ্ধান্ত নেন। সপ্তাহে ৫ দিন বিমানযাত্রা ক্লান্তিকর হলেও সন্তানের মুখ দেখলেই সব ভুলে যান তিনি। এভাবে ব্যক্তিগত ও চাকরি জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করছেন র্যাচেল। মজার বিষয় হচ্ছে, প্রতিদিন বিমানে করে যাওয়া আসা এবং অন্যান্য খরচ হিসাব করলে তা অফিসের কাছে বাড়ি ভাড়া করে থাকার চেয়েও কম।
কুয়ালালামপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে আগে র্যাচেলকে গুণতে হতো ১৪০০-১৫০০ রিঙ্গিত বা ৪০ হাজার টাকার বেশি। অথচ এয়ারএশিয়ার কর্মী হিসেবে প্রতি ফ্লাইটে র্যাচেলের খরচ হয় মাত্র ৫০ রিঙ্গিত বা প্রায় ১৩৫০ টাকা। এতে প্রতি মাসে যাতায়াত বাবদ তার খরচ গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১০০ রিঙ্গিত। এতে তার খরচ বাড়া তো দূরের কথা, উল্টো কমেছে। প্রতি মাসে কয়েকশ’ রিঙ্গিত সঞ্চয়ও করতে পারছেন র্যাচেল।
মন্তব্য করুন