তাইওয়ান ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন।
সোমবার ( ১৭ ফেব্রুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের ওয়েবসাইট থেকে তাইওয়ানের বিষয়ে একটি বিবৃতি সরিয়ে ফেলেছে। বিবৃতিতে উল্লেখ ছিল যে, ওয়াশিংটন তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে চীনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চীনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের পরিবর্তন তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোকে ভুল সংকেত পাঠাচ্ছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘তার ভুল সংশোধন করতে’ আহ্বান জানিয়েছে তারা।
তাইওয়ান-মার্কিন সম্পর্ক সংক্রান্ত ফ্যাক্ট শিটে আগে উল্লেখ ছিল যে, আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না। গত সপ্তাহে এটি সরিয়ে ফেলা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একটি রুটিন আপডেট বলে অভিহিত করে।
মার্কিন এক মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ‘এক চীন’ নীতিতে অটল রয়েছে। এ নীতি অনুসারে তারা তাইওয়ানের পরিবর্তে চীনের সাথে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
অন্যদিকে চীন স্বশাসিত তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন এলাকা হিসেবে দেখে, যা একদিন চীনের অংশ হবে। এ লক্ষ্যে বলপ্রয়োগের বিকল্পও তারা উড়িয়ে দেয়নি। তবে অনেক তাইওয়ানের বাসিন্দা তাদের নিজেদের একটি আলাদা জাতি হিসেবে মনে করে।
নীতির এই পরিবর্তন সম্পর্কে তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের ডি ফ্যাক্টো দূতাবাস আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইন তাইওয়ানের একজন মুখপাত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যে ফ্যাক্ট শিটটি আপডেট করা হয়েছে তা তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে জানানোর জন্য। তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলেছি যে, উভয় পক্ষের যে কোনো একতরফা অবস্থান পরিবর্তনের বিরোধিতা করি।
রোববার তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিন চিয়া-লুং যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের নীতি পরিবর্তনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি এটিকে ইতিবাচক এবং তাইওয়ানবান্ধব ভাষা বলে অভিহিত করেন।
এদিকে সোমবার এক প্রেস কনফারেন্সে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা এ নীতির পরিবর্তনকে তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের গুরুতর পশ্চাৎপসরণ বলে উল্লেখ করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, এটি তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোকে একটি ভুল ও গুরুতর সংকেত পাঠাচ্ছে । এছাড়া এটি চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাইওয়ানকে ব্যবহার করার যুক্তরাষ্ট্রের ভুল নীতির আরেকটি উদাহরণ।
মন্তব্য করুন