টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তখন গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেন, তার পড়াশোনার খরচ সবাই চাঁদা তুলে চালাবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। গ্রামবাসী মিলে ৭০ ডলার এবং ৭৬টি ডিম সংগ্রহ করে যুবকের হাতে তুলে দেন, যা বর্তমান সময়ের ৮০ হাজার টাকার সমান। এই টাকা দিয়ে বেইজিংয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ওই যুবক।
এরপর আর তাকে পিছন ফিলে তাকাতে হয়নি। তিনি দেশের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বলা হচ্ছে চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ানের গুয়াংমিং গ্রামের বাসিন্দা রিচার্ড লিউ কিয়াংডংয়ের কথা।
১৯৯০ সালে গ্রামবাসী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সাহায্য করেছিলেন। বর্তমানে লিউ ৫৮ হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম ৪২৭ নম্বরে। ৫০ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী চীনের শীর্ষস্থানীয় একটি ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
তবে লিউ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও গ্রামবাসীর সেই উপকারের কথা ভুলেননি। তিনি ২০১৬ সালে সিদ্ধান্ত নেন গ্রামের যারা তাকে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তাদের সেই ঋণ শোধ করবেন। ওই বছর থেকেই প্রতি বছর গ্রামের বয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তিকে ১০ হাজার ইউয়ান করে দেন এই ধনকুবের, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার সমান।
ওই গ্রামে ১ হাজার ৪০০ পরিবার রয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে খাদ্য, পোশাক, চাকরিসহ নানা উপহার পাঠান লিউ। অর্থাৎ গ্রামের সবাইকে তিনি সুখে শান্তিতে বসবাস করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এখন এই গ্রামে আর কেউ অভাবগ্রস্ত নেই।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে লিউ নিজেই তার গ্রামে গিয়েছিলেন এবং গ্রামবাসীকে বিভিন্ন ধরনের উপহার তুলে দিয়েছেন। একজন গ্রামবাসী বলেন, ‘লিউ তাদের মনে রেখেছেন এজন্য তারা লিউয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ অন্য একজন বলেন, গ্রামে অনেক পরিবার রয়েছে। লিউয়ের অবদান গ্রামের মানুষ আগামী কয়েক দশক মনে রাখবে।
লিউয়ের এই উদারতার প্রশংসা করেছেন চীনের সাধারণ মানুষ। অনেকে বলছেন মানুষের মেধা এবং ভাগ্য তাকে অনেকদূর নিয়ে যেতে পারে। তবে যারা উদারতা এবং কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করতে পারে তারা সমাজকে বহুদূর এগিয়ে নিতে পারেন।
মন্তব্য করুন