যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অভিষেক ভাষণে পানামা খাল দখল করার কথা জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘পানামা নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। বর্তমানে চীন এই খাল পরিচালনা করছে।’ ট্রাম্পের দাবি, পানামা খাল চীনকে দেইনি, এই খাল তাদের দেওয়া হয়নি। এর ফলে তিনি খালটি ফেরত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে পানামা খাল দখলের এই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো। তিনি বলেছেন, ‘পানামা খাল পানামার হাতে থাকবে। কোনো দেশ আমাদের কর্তৃত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’
পানামা খাল শুধু আঞ্চলিক জলপথ নয়, বরং বিশ্ব বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতিকে সক্রিয় রেখেছে এ খাল।
১৯৯৯ সালে পানামা খাল পুরোপুরি পানামার হাতে চলে যায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই খালের নির্মাণ ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ২০২৩ সালে চীনের সঙ্গে পানামা নতুন অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার পর ট্রাম্পের এই দাবি সামনে আসে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনো এই গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হাত ছাড়া চায় না।
ট্রাম্পের দাবি, চীন পানামা খাল পরিচালনা করছে। তবে তা সঠিক নয়। চীনা কোম্পানি হাচিসন পোর্ট হোল্ডিংস পানামার বালবোয়া ও ক্রিস্টোবাল বন্দরগুলো পরিচালনা করে। এই কোম্পানি হংকংভিত্তিক হলেও, চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নয়। চীনের এই বাণিজ্যিক উপস্থিতি পানামার অর্থনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব ফেললেও, খালের মূল পরিচালনায় চীনের কোনো হাত নেই। এছাড়া পানামার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীন। যেমন ২০১৭ সালে পানামা চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগদান করে।
খালটি নির্মাণের পথ কঠিন ছিল। নির্মাণকালে অনেক শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। ফরাসি প্রকৌশলীরা ব্যর্থ হয়েছিলেন। এরপর ১৯৭৭ সালে, অনেক বিতর্কের পর খালটির নিয়ন্ত্রণ লাভ করে পানামা। তথ্য: বিবিসি, সিএনএন
মন্তব্য করুন