চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতে ভূমিকম্পে হতাহতদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত ১২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকতে পারে। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ায় চাপা পড়াদের জীবিত থাকা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, হিমালয়ের পাদদেশে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে আটকে পড়া ৪০০ জনেরও বেশি লোককে উদ্ধার করা হয়েছে। চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, ৩০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) বেঁচে থাকাদের সন্ধানে দ্বিতীয় দিনের মতো বিরতিহীন অভিযান চলছে।
মঙ্গলবারের ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল জিজাং অঞ্চলে। এখানে কম্পনের মাত্রা ছিল ভয়াবহ। যার প্রভাবে প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের ভবনগুলোও কেঁপে ওঠে। কম্পনটির সূত্রপাতের অবস্থান বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এভারেস্টের প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে থাকায় আপটার শক নিয়ে বেশ শঙ্কা জাগায়। তবে শেষমেশ প্রতিবেশী দেশগুলোতে বড় কোনো ধরনের বিপদ ঘটেনি।
এদিকে ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা জীবিতদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, সেখানে রাতের তাপমাত্রা প্রায় শূন্য ডিগ্রি, যা হাইপোথার্মিয়া এবং ডিহাইড্রেশনে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবার জানায়, তিব্বতের শিগাতসে অঞ্চলে ৩ হাজার ৬০৯টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এসব বাড়িতে ৮ লাখ লোক বাস করতেন। আহতদের সাহায্য করার জন্য ৫০০ জনের বেশি উদ্ধারকর্মী পাঠানো হয়েছে। কাজ করছে ১০৬টি অ্যাম্বুলেন্স। এ ছাড়া আরও সহায়তা পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
প্রসঙ্গত, শক্তিশালী ভূমিকম্পে তছনছ হয় চীনের জিজাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেইজিং সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে অঞ্চলটিতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। বিষয়টি শিনহুয়াকে নিশ্চিত করেছে আঞ্চলিক দুর্যোগ ত্রাণ সদর দপ্তর।
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্পনের এপিসেন্টার ছিল ২৮.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৪৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। ভূমিকম্পটি ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।
এদিকে মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, ভারত, ভুটানেও ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে। চীনের ভূমিকম্পের প্রভাবে এ তিন দেশে কম্পন অনুভূত হয়।
মন্তব্য করুন