অতীতে আফগানিস্তানে অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল আফিম চাষ ও পপি ফুল উৎপাদন। দেশটিতে আফিম নিষিদ্ধ হওয়ার পর এখন তালেবান সরকার খনিজ সম্পদ ও রত্ন আহরণের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। খবর স্ট্রেট অ্যারো নিউজ।
আফগানিস্তান প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন খনিজ এবং রত্নের সম্ভার নিয়ে পরিপূর্ণ একটি দেশ। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের ধারণা অনুযায়ী, দেশটিতে ১ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি খনিজ, রত্নপাথর ও ধাতু রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বিরল ধাতু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর ধরে এই সম্পদগুলো আহরণের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেছিল। তবে সেখানকার নিরাপত্তা ঝুঁকি, দুর্নীতি ও অবকাঠামোর অভাবের কারণে এসব প্রকল্প সফল হয়নি।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তান নানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এই সময়ে, আফগান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিদেশি সাহায্য পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অর্থনীতি সংকুচিত হতে শুরু করে।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, আফিম ছিল আফগানিস্তানের জিডিপির ৮ শতাংশ, এর নিষিদ্ধকরণের পর কৃষকরা প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আফিম চাষে বড় ধরনের পতন ঘটেছে, যার কারণে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছে।
এদিকে তালেবান সরকার খনিজ সম্পদ ও রত্ন উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এতে আগ্রহ দেখিয়েছে তুরস্ক, চীন, রাশিয়া ও ইরান এ ছাড়া আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশের সবুজ পান্নার খনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। বর্তমানে, সরকার পান্না উত্তোলন এবং এর ওপর রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা করছে। একইভাবে রুবি, নীলকান্তমণি, স্বর্ণ, তামা ও লোহার খনিজও উত্তোলনের লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে আফগান সরকার খনিজ খননে আগ্রহী ব্যবসায়ী এবং কোম্পানিগুলোর জন্য ৫৬০টি লাইসেন্স দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, গত দুই বছরে আফগানিস্তানের অর্থনীতি ২৬ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। তবে, খনিজ সম্পদের উন্নয়ন ও সেগুলোর কার্যকর ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তবে আফগানিস্তানের অর্থনীতি আবারও শক্তিশালী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন