মিয়ানমারে গত বছর ৩৫ লাখের বেশি মানুষ সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আগের বছরের তুলনায় দেশটিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখের বেশি। এ অবস্থায় দেশটিতে মানবিক সংকট আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। খবর এএফপি।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারে বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। গোষ্ঠীগুলো মূলত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই সংঘাত এখন দেশটির সীমান্ত ও অধিকাংশ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ তাদের বাড়ি থেকে নিরাপত্তা ও মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পালাতে বাধ্য হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের গত বছর মোট ৫ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার ৬ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু। গত বছরের শেষ দিকে বিমান হামলা, ড্রোন হামলা, গোলাবর্ষণ, অভিযান ও নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সংঘাত, বিপর্যয়, মহামারি, বিস্ফোরক অস্ত্র ও অর্থনৈতিক পতনের কারণে চলতি বছর দেশটিতে আরো ‘ভয়াবহ’ অবস্থা বিরাজ করবে। এ বছর দেশটিতে জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ বা প্রায় ২ কোটি মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।
সম্প্রতি দেশটির হালনাগাদ আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মিয়ানমারের জন্যসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ১৩ লাখে। ২০১৪ সালে আগের আদমশুমারিতে যা ছিল ৫ কোটি ১৫ লাখ। ১০ বছরের ব্যবধানে দেশটিতে জনসংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে এ দুই আদমশুমারির কোনোটিতেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
চলতি বছর নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে এই আদমশুমারি করে জান্তা সরকার। তারা জানিয়েছে, চলমান অস্থিরতা ও সংঘাতের মধ্যেএই আদমশুমারি চালানো হয়েছে। তবে আদমশুমারির ফলাফলকে ভুয়া বলে ব্যাপকভাবে এটির নিন্দা জানিয়েছেন জান্তাবিরোধীরা।
মন্তব্য করুন