‘বিমানের ডানায় একটি পাখি আটকে আছে। আমরা অবতরণ করতে পারছি না। এ মুহূর্তে অর্থাৎ মৃত্যুর আগ মুহূর্তে আমি কী শেষ বার্তা দিয়ে যাব?’ দক্ষিণ কোরিয়ার যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের আগ মুহূর্তে ওই বিমানের ভেতর থাকা এক যাত্রী তার আত্মীয়কে ঠিক এভাবেই বার্তা পাঠান। যেখানে তিনি শেষ বার্তা দেবেন কি না জানতে চান। অর্থাৎ তারা টের পেয়েছেন, যে এখানেই হয়ত শেষ। তারা মৃত্যুর দারপ্রান্তে রয়েছেন।
সকাল ৯টার দিকে এমন বার্তা দেখতে পেয়ে ওই যাত্রীর আত্মীয় তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার কাছ থেকে আর কোনো সাড়া পাননি। তিনি বেঁচে আছেন না কি মারা গেছেন, সেটিও এই আত্মীয় আর জানেন না।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার সাক্ষী হলো দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জেজু এয়ারের বিমানটি সেখানে ১৮১ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। যাদের মধ্যে দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় দমকল বাহিনীর ধারণা, উড়োজাহাজটিতে এ দুজন ছাড়া ১৭৯ জনের কেউ-ই আর বেঁচে নেই। উড়োজাহাজটি থাইল্যান্ড থেকে যাত্রা করে এসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণ করতে যাচ্ছিল।
বিমানটি স্থানীয় সময় সকাল ৯টার একটু পর ল্যান্ডিং গিয়ার ছাড়া ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে। এরপর এটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আঘাত হানে। এর সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। মুয়ান ফায়ার বিভাগের প্রধান লি জিয়ং-হুন জানিয়েছেন, তাদের ধারণা পাখির আঘাতে অথবা খারাপ আবহাওয়ার কারণে হয়ত বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। ওই যাত্রীর বার্তা থেকে যা বোঝা যাচ্ছে বিমানটিতে একটি পাখি আঘাত করেছিল। যেটি আবার ডানায় আটকে যায়। এতে ত্রুটির সৃষ্টি হয়ে বিমানটি আর স্বাভাবিকভাবে অবতরণ করতে পারেনি।
এদিকে ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মু ‘উদ্ধার অভিযানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার’ নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন