মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের চিন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ব্রাদারহুড। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
চিন ব্রাদারহুডের মুখপাত্র ইয়াও ম্যাং জানান, তারা চিন রাজ্যের ৮০ শতাংশ এলাকা মুক্ত করেছে। মিনদাত ও কানপেটলেট শহরের দখল নেওয়ার পর বিদ্রোহীরা এখন উত্তরের ফালাম শহরে জান্তার শেষ ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, রাজ্যটির রাজধানী হাক্কা, ফালাম, তেদিম ও থানটালাং শহরে জান্তার কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছে। পালেতাওয়া, মাতুপি, কানপেটলেট এবং মিনদাত শহর সম্পূর্ণ মুক্ত করা হয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) মুক্ত শহরগুলো থেকে ১৩ জন রাজনৈতিক বন্দিকেও মুক্ত করা হয়েছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কার্যক্রম
চিন ব্রাদারহুড মূলত বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত। এতে ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স, স্যাগাইন অঞ্চলের গ্যাংগাও জেলার ইয়াও আর্মি এবং মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা রয়েছেন। এ গোষ্ঠী চলতি বছরের ৯ নভেম্বর থেকে ‘অপারেশন সিবি’ নামে একটি বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে।
বিদ্রোহীরা জানায়, তাদের আক্রমণের মুখে ১৬৮ জন জান্তা সেনা ও পুলিশ আত্মসমর্পণ করেছে। এ পর্যন্ত ৩০০ জন জান্তা সেনা বন্দি হয়েছে, যাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
রাখাইনের বিদ্রোহীদের সহযোগিতা
চিন ব্রাদারহুড দাবি করেছে, রাখাইনের আরাকান আর্মি তাদের অস্ত্র, রসদ এবং কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এর আগে আরাকান আর্মি রাখাইনে জান্তার আঞ্চলিক সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে। এরপর থেকে দেশটিতে সেনা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মিয়ানমারের মাত্র ২১ শতাংশ ভূখণ্ডে সামরিক বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বাকিটা বিদ্রোহীদের দখলে অথবা সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ধারাবাহিক সাফল্যে মিয়ানমার জান্তার শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ দ্রুত ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।
মন্তব্য করুন