মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক সদরদপ্তর আরাকান আর্মি (এএ) দখল করেছে। এটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড নামে পরিচিত।
দুই সপ্তাহ ধরে চলা তীব্র বন্দুকযুদ্ধের পর, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) শুক্রবার বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এই কমান্ড দখলে নেয়। এতে তারা কার্যত রাখাইন রাজ্যের পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। খবর রয়টার্স।
আরাকান আর্মি জানায়, তারা সীমান্তে অবস্থিত এই রাজ্যটির গুরুত্বপূর্ণ সেনা সদরদপ্তর দখল করেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই কমান্ড কেন্দ্রের পতনের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি, তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির দাবি অনুযায়ী, এটি তাদের বড় একটি সাফল্য।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক অস্থিরতা চলে আসছে। সেনাবাহিনী বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার পর, মিয়ানমারজুড়ে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী বিদ্রোহ শুরু করে। আরাকান আর্মি তাদের অংশ হিসেবে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে একটি বিদ্রোহী জোট গঠন করেছে।
এই জোটের অন্য সদস্যরা হলেন কোকাং অঞ্চলের এমএনডিএএ (মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স আর্মি) এবং শান রাজ্যের টিএনএলএ ( টাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি) ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই জোটটি জান্তার বিরুদ্ধে বড় পরিসরে অভিযান শুরু করে, যা ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে পরিচিত।
এদিকে রাখাইন রাজ্যটি প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও এটি মিয়ানমারের অন্যতম দরিদ্র রাজ্য। এই অঞ্চলটি চীনে গ্যাস সরবরাহের একটি প্রধান পথ হলেও, স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিম্ন।
আরাকান আর্মির সাম্প্রতিক সাফল্য মিয়ানমারের জান্তা সরকারের জন্য একটি বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্টে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি মিয়ানমারের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর লাশিওতে অবস্থিত সেনা সদরদপ্তর দখল করেছিল, যা ছিল জান্তা বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রথম আঞ্চলিক সেনা কমান্ড দখল।
এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
মন্তব্য করুন