ভারত মহাসাগর থেকে শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দেশটির নৌবাহিনীর বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর বরাতে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত মহাসাগরে একটি ফিশিং ট্রলারে ভাসছিলেন ওই রোহিঙ্গারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার থেকে তারা পালিয়ে এসেছেন। খবর পেয়ে ট্রলার থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করে নিরাপদে বন্দরে আনা হয়েছে।
তাদের মধ্যে ২৫ শিশুসহ ১০২ জনকে শ্রীলঙ্কার পূর্ব বন্দর ত্রিনকোমালিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে অবস্থানের অনুমতি দেওয়ার আগে তাদের মেডিকেল চেকআপ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ব্যাপকভাবে নির্যাতিত। প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এখনো সেখানে হত্যাযজ্ঞ চলমান। তাই প্রায়ই রোহিঙ্গারা দীর্ঘ সমুদ্র ভ্রমণে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এমনই একটি দলকে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে দেখতে পান। এরপর নৌবাহিনীকে জানানো হলে ভাসমান ট্রলার থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। কিন্তু রোহিঙ্গারা ঠিক কোথা থেকে আসছিলেন বা কোথায় যাচ্ছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া উদ্ধারের মুহূর্তের অবস্থাও বিস্তারিত জানায়নি নৌবাহিনী।
নৌবাহিনীর মুখপাত্র শুক্রবার বলেছেন, ভাষা বোঝার অসুবিধার কারণে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। উদ্বাস্তুরা কোথায় যাচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। হতে পারে সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আবহাওয়া তাদের কাঙ্ক্ষিত পথ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার উপকূলে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ভেসে আসা নতুন নয়। প্রায়ই দেশটির নৌবাহিনী সমুদ্র থেকে রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে।
এদিকে বাংলাদেশে হাতিয়ার ভাসানচর থেকে পালানোর সময় চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বঙ্গোপসাগর থেকে ২৪ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। কোস্টগার্ডের রায়পুর বাতিঘর স্টেশনের সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে সাগর থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা পারকি সৈকত এলাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।
পরে আটক হওয়াদের কক্সবাজার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১১ শিশু, আট পুরুষ ও পাঁচ নারী রয়েছে। তারা একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা করে হাতিয়ার ভাসান চরের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন